পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩০
দুর্গেশনন্দিনী

বিমল কিছুই জানেন না; হাসিয়া কহিলেন, “নবাবজাদি! আবার আপনার শুভকার্য্যে আমরা নিমন্ত্রিত হইব।”

 বিমলার নিকট হইতে আসিয়া আয়েষা তিলোত্তমাকে ডাকিয়া এক নিভৃত কক্ষে আনিলেন। তিলোত্তমার কর ধারণ করিয়া কহিলেন, “ভগিনি! আমি চলিলাম। কয়মনোবাক্যে আশীর্ব্বাদ করিয়া যাইতেছি, তুমি অক্ষয় মুখে কালযাপন কর।”

 তিলোত্তমা কছিলেন, “আবার কতদিনে আপনার সাক্ষাৎ পাইব?”

 আয়েষা কহিলেন, “সাক্ষাতের ভরসা কিরূপে করিব?”

 তিলোত্তমা বিষণ্ণ হুইলেন। উভয়ে নীরব হইয়া রছিলেন।

 ক্ষণকাল পরে আয়েষা কহিলেন, “সাক্ষাৎ হউক বা না হউক, তুমি আরেষাকে ভুলিয়া যাইবে না?”

 তিলোত্তমা হাসিয়া কছিলেন “আয়েষাকে ভুলিলে যুবরাজ আমার মুখ দেখিবেন না।”

  গাম্ভীর্য্য-সহকারে কহিলেন, “এ কথায় আমি সন্তুষ্ট হইলাম মা! তুমি আমার কথা কথন যুবরাজের নিকট তুলিও না। এ কথা অঙ্গীকার কর।”

 আয়েষা বুঝিয়াছিলন যে, জগৎসিংহের জন্য আয়েষা যে এ জন্মের মুখে জলাঞ্জলি দিয়াছেন, এ কথা জগৎসিংহের হৃদয়ে শেলস্বরূপ বিদ্ধ রহিয়াছে। আয়েষার প্রসঙ্গমাত্রও তাহার অনুতাপকর হইতে পারে।

 তিলোত্তমা অঙ্গীকার করিলেন। আয়েষা কহিলেন, “অথচ বিস্মৃতও হইও না, স্মরণার্থ যে চিহ্ন দিই, তাহা ত্যাগ করিও না।”

 এই বলিয়া আয়েষা দাসীকে ডাকিয়া আজ্ঞা দিলেন। আজ্ঞামত