পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমাপ্তি Rరి) দাসী গজদন্তনিৰ্ম্মিত পাত্রমধ্যস্থ রত্নালঙ্কার আনিয়া দিল। আয়েষা দাসীকে বিদায় দিয়া, সেই সকল অনুষ্কার স্বহস্তে তিলোত্তমার অঙ্গে পরাইতে লাগিলেন । তিলোত্তম ধনাঢ্য-ভূস্বামিকস্ত ; তথাপি সে অলঙ্কাররাশির অদ্ভূত শিল্পরচনা এবং ভষ্মধ্যবৰ্ত্তী বহুমূল্য চীরকাদি রত্নরাজির অসাধারণ তীব্রদীপ্তি দেখিয়া চমৎকৃত হইলেন। বস্তুতঃ আয়েযা পিতৃদত্ত নিজ অঙ্গভূষণরাশি নষ্ট করিয়া তিলোত্তমার জন্য অন্তজনৰ্ভুলভ এই সকল রত্নভূষা প্রস্তুত করাইয়াছিলেন। তিলোত্তম তত্তাবতের গৌরব করিতে লাগিলেন। আয়েষা কহিলেন, “ভগিনি, এ সকলের প্রশংসা করিও না। তুমি আজ যে রত্ন হৃদয়ে ধারণ করিলে, এ সকল তাহার চরণরেণু-তুল্য নহে ।” এ কথা বলিতে বলিতে আষেবা কত ক্লেশে যে চক্ষের জল সংবরণ করিলেন, তিলোত্তম তাহ কিছুই জানিতে পারিলেন না । অলঙ্কারসন্নিবেশ সমাধা হইল, আয়েয। তিলোত্তমার দুইটি হস্ত ধরিয়া তাহার মুখপানে চাহিয়া রছিলেন। মনে মনে ভাবিতে লাগিলেন, “এ সরল প্রেম-প্রতিম মুখ দেখিয়া ত বোধ হয়, প্ৰাণেশ্বর কখন মনপী% পাইবেন না। যদি বিধাতার অন্তরূপ ইচ্ছা ন হইল, তবে তাহার চরণে এই ভিক্ষ যে, যেন ইহার দ্বারা তাহার চিরস্থ সম্পাদন করেন ।” * তিলোত্তমাকে কহিলেন, “তিলোত্তম ! আমি চগিলাম" তোমার. স্বামী ব্যস্ত থাকিতে পারেন, তাহার নিকট বিদায় লইতে গিয়া কালহরণ করিব না। জগদীশ্বর তোমাদিগকে দীর্ঘায়ুঃ করিবেন। আমি যে - রত্নগুলি দিলাম, অঙ্গে পরিও । আর আমার—তোমার সাররত্ন হৃদয়মধ্যে রাথিও।”