বীরেন্দ্রসিংহ দক্ষিণ হস্ত প্রসারণ করিয়া পরমহংসকে দেখাইলেন; দক্ষিণ হস্তের উপর বাম হস্তের অঙ্গুলি নির্দ্দেশ করিয়া কহিলেন, “ও পাদপদ্মের আশীর্ব্বাদে এই হস্ত মানসিংহের রক্তে প্লাবিত করিব।”
অভিরাম স্বামী কহিলেন, “স্থির হও; রাগান্ধ হইয়া আত্মকার্য্য নষ্ট করিও না; মানসিংহের পূর্ব্বকৃত অপরাধের অবশ্য দণ্ড করিও, কিন্তু আক্বর শাহের সহিত যুদ্ধে কার্য্য কি?”
বীরেন্দ্র সক্রোধে কহিতে লাগিলেন, “আক্বর শাহের পক্ষ হইলে কোন্ সেনাপতির অধীন হইয়া যুদ্ধ করিতে হইবে? কোন্ যোদ্ধার সাহায্য করিতে হইবে? কাহার আনুগত্য করিতে হইবে? মানসিংহের! গুরুদেব! এ দেহ বর্ত্তমানে এ কার্য্য বীরেন্দ্রসিংহ হইতে হইবে না।”
অভিরাম স্বামী বিষণ্ণ হইয়া নীরব রহিলেন। কিয়ৎক্ষণ পরে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তবে কি পাঠানের সহায়তা করা তোমার শ্রেয়ঃ হইল?”
বীরেন্দ্র উত্তর করিলেন, “পক্ষাপক্ষ প্রভেদ করা কি শ্রেয়ঃ?”
অ। হাঁ, পক্ষাপক্ষ প্রভেদ করা শ্রেয়ঃ।
বী। তবে আমার পাঠান-সহকারী হওয়া শ্রেয়ঃ।
অভিরাম স্বামী দীর্ঘ-নিঃশ্বাস ত্যাগ করিয়া পুনরায় নীরব হইলেন; চক্ষে তাঁহার বারিবিন্দু উপস্থিত হইল। দেখিয়া বীরেন্দ্রসিংহ যৎপরোনাস্তি বিস্ময়াপন্ন হইয়া কহিলেন,—“গুরো! ক্ষমা করুন; আমি না জানিয়া কি অপরাধ করিলাম আজ্ঞা করুন।”
অভিরাম স্বামী উত্তরীয়-বস্ত্রে চক্ষু পরিষ্কার করিয়া কহিলেন, “শ্রবণ