পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বাদশ পরিচ্ছেদ
আশ্‌মানির অভিসার

 দিগ্‌গজ গজপতির মনোমোহিনী আশ্‌মানি কিরূপ রূপবতী, জানিতে পাঠকমহাশয়ের কৌতূহল জন্মিয়াছে সন্দেহ নাই। অতএব তাঁহার সাধ পূরাইব। কিন্তু স্ত্রীলোকের রূপবর্ণন-বিষয়ে গ্রন্থকারগণ যে পদ্ধতি অবলম্বন করিয়া থাকেন, আমার সদৃশ অকিঞ্চন জনের তৎপদ্ধতিবহির্ভূত হওয়া অতি ধৃষ্টতার বিষয়। অতএব প্রথমে মঙ্গলাচরণ করা কর্তব্য।

 হে বাগ্দেবি! হে কমলাসনে। শরদিন্দুনিভাননে! অমল-কমল-দল-নিন্দিত-চরণ-ভক্তজন-বৎসলে! আমাকে সেই চরণকমলের ছায়া দান কর; আমি আশানির রূপবর্ণন করিব। হে অরবিন্দানন-সুন্দরীকুল-গর্ব্বখর্ব্বকারিণি! হে বিশাল-শাল-দীর্ঘ-সমাস-পটল-সৃষ্টি-কারিণি! একবার পদনখের এক পার্শ্বে স্থান দাও, আমি রূপবর্ণন করিব। সমাস-পটল, সন্ধি-বেগুন, উপমা-কাঁচকলার চড়চড়ি রাঁধিয়া এই খিচুড়ি তোমায় ভোগ দিব। হে পণ্ডিতকুলেপ্সিত-পয়ঃপ্রস্রবিণি! হে মুর্খজন-প্রতি ক্বচিৎ কৃপকারিনি! হে অঙ্গুলি-কণ্ডূয়ন-বিষম-বিকার-সমুৎপাদিনি! হে বটতলা-বিদ্যাপ্রদীপ-তৈল-প্রদায়িনি! আমার বুদ্ধির প্রদীপ একবার উজ্জ্বল করিয়া দিয়া যাও! মা! তোমার দুই রূপ; যেরূপে তুমি কালিদাসকে