পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ
দিগ্‌গজের সাহস

 বিমলা দ্রুতপাদবিক্ষেপে শীঘ্র মান্দারণ পশ্চাৎ করিলেন: নিশা অত্যন্ত অন্ধকার, নক্ষত্রালোকে সাবধানে চলিতে লাগিলেন। প্রান্তরপথে প্রবেশ করিয়া বিমলা কিঞ্চিৎ শঙ্কান্বিত হইলেন; সমভিব্যাহারী নিঃশব্দে পশ্চাৎ পশ্চাৎ আসিতেছেন, বাক্যব্যয়ও নাই। এমন সময়ে মনুষ্যের কণ্ঠস্বর শুনিলে কিছু সাহস হয়, শুনিতে ইচ্ছাও করে। এই জন্য বিমলা গজপতিকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “রসিকরতন! কি ভাবিতেছ?”

 রসিকরতন বলিলেন, “বলি তৈজসপত্রগুলা!”

 বিমলা উত্তর না দিয়া মুখে কাপড় দিয়া হাসিতে লাগিলেন।

 ক্ষণেককাল পরে, বিমলা আবার কথা কহিলেন, “দিগ্‌গজ, তুমি ভূতের ভয় কর?”

 “রাম! রাম! রাম! রাম নাম বল”, বলিয়া দিগ্‌গজ বিমলার পশ্চাতে দুই হাত সরিয়া আসিলেন।

 একে পায় আরে চায়। বিমলা কহিলেন, “এ পথে বড় ভূতের দৌরাত্ম্য।” দিগ্‌গজ আসিয়া বিমলার অঞ্চল ধরিলেন। বিমলা বলিতে লাগিলেন,—“আমরা সে দিন শৈলেশ্বরের পূজা দিয়া আসিতেছিলাম, পরের মধ্যে বটতলায় দেখি যে, এক বিকটাকার মূর্ত্তি।”