পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষোড়শ পরিচ্ছেদ
শৈলেশ্বর-সাক্ষাৎ

 বিমলা মন্দির-মধ্যে প্রবেশ করিয়া প্রথমে বসিয়া একটু স্থির হইলেন। পরে নতভাবে শৈলেশ্বরকে প্রণাম করিয়া যুবরাজকে প্রণাম করিলেন। কিয়ৎক্ষণ উভয়েই নারব হইয়া রহিলেন; কে কি বলিয়া আপন মনােগত ভাব ব্যক্ত করিবেন? উভয়েরই সঙ্কট। কি বলিয়া প্রথমে কথা কহিবেন। বিমণএ বিষযের সন্ধিবিগ্রহে পণ্ডিতা; ঈষৎ হাস্য করিয়া বলিলেন,“যুবরাজ! আজ শৈলেশ্ববের অনুগ্রহে আপনার দর্শন পাইলাম; একাকিনী এ রাত্রে প্রান্তর-মধ্যে, আসিতে ভীতা হইয়াছিলাম, এক্ষণে মন্দির-মধ্যে আপনার দর্শনে সাহস পাইলাম।”

 যুবরাজ কহিলেন, “তােমাদিগের মঙ্গল ত?”

 বিমলার অভিপ্রায়, প্রথমে জানেন,—রাজকুমার যথার্থ তিলােত্তমাতে অনুরক্ত কি না, পশ্চাৎ অন্য কথা কহিবেন। এই ভাবিয়া বলিলেন, “যাহাতে মঙ্গল হয়, সেই প্রার্থনাতেই শৈলেশ্বরের পূজা করিতে আসিয়াছি। এক্ষণে বুঝিলাম, আপনার পূজাতেই শৈলেশ্বর পরিতৃপ্ত আছেন, আমার পূজাগ্রহণ করিবেন না, অনুমতি হয় ত প্রতিগমন করি।”

 যুব। যাও। একাকিনী তোমার যাওয়া উচিত হয় না; আমি তোমাকে রাখিয়া আসি।