লাগাইলেন। জানালা নিজস্থানে দৃঢ়রূপে সংস্থাপিত হইল, বাহির হইতে উদ্ঘাটিত হইবার সম্ভাবনা রহিল না।
বিমলা অতি দ্রুতবেগে দুর্গের শেলখানায় গেলেন। শেলখানার প্রহরীকে কহিলেন, “আমি তোমার নিকট যাহা চাহি, তুমি কাহারও সাক্ষাতে বলিও না। আমাকে দুইটা বর্শা দাও—আবার আনিয়া দিব।”
প্রহরী চমৎকৃত হইল। কহিল, “মা, তুমি বর্শা লইয়া কি করিবে?”
প্রত্যুৎপন্নমতি বিমলা কহিলেন, “আজ আমার বীরপঞ্চমীর ব্রত, ব্রত করিলে বীর পুত্ত্র হয়; তাতে রাত্রে অস্ত্রপূজা করিতে হয়; আমি পুত্ত্রকামনা করি, কাহারও সাক্ষাতে প্রকাশ করিও না।”
প্রহরীকে যেরূপ বুঝাইলেন, সেও সেইরূপ বুঝিল। দুর্গস্থ সকল ভৃত্য বিমলার আজ্ঞাকারী ছিল। সুতরাং দ্বিতীয় কথা না কহিয়া দুইটা শাণিত বর্শা দিল।
বিমলা বর্শা লইয়া পূর্ব্ববেগে গবাক্ষের নিকট প্রত্যাগমন করিয়া পূর্ব্ববৎ ভিতর হইতে জানালা খুলিলেন, এবং বর্শা সহিত নির্গত হইয়া জগৎসিংহের নিকট গেলেন।
ব্যস্ততা প্রযুক্তই হউক, বা নিকটেই থাকিবেন এবং তৎক্ষণেই প্রত্যাগমন করিলেন, এই বিশ্বাসজনিত নিশ্চিন্তভাব প্রযুক্তই হউক বিমলা বহির্গমনকালে জালরন্ধ্র পথ পূর্ব্ববৎ অবরুদ্ধ করিয়া যান নাই। ইহাতে প্রমাদ-ঘটনার এক কারণ উপস্থিত হইল। জানালার অতি নিকটে এক আম্রবৃক্ষ ছিল, তাহার অন্তরালে এক শস্ত্রধারী পুরুষ দণ্ডায়মান ছিল, সে বিমলার এই ভ্রম দেখিতে পাইল। বিমলা যতক্ষণ না দৃষ্টিপথ অতিক্রম করিলেন, ততক্ষণ শস্ত্রপাণি পুরুষ বৃক্ষের অন্তরালে রহিল; বিমলা