বিমলা আসিয়া নিজ কক্ষে পালঙ্কের উপর বসিলেন। বিমলার মুখ অতি হর্ষপ্রফুল্ল, তিনি গতিকে মনোরথ সিদ্ধ করিয়াছেন। কক্ষমধ্যে প্রদীপ জ্বলিতেছে; সন্মুখে মুকুর; বেশভূষা যেরূপ প্রদোষকালে ছিল, সেইরূপই রহিয়াছে; বিমলা দৰ্পণাভ্যন্তরে মূহুর্ত্ত জন্য নিজ প্রতিমূর্ত্তি নিরীক্ষণ করিলেন। প্রদোষকালে যেরূপ কুটিল-কেশ-বিন্যাস করিয়াছিলেন, তাহা সেইরূপ রহিয়ছে; বিশাল লোচনমূলে সেইরূপ কজ্জলপ্রভা অধরে সেইরূপ তাম্বুল-রাগ; সেইরূপ কর্ণাভরণ পীবরাংসংসক্ত হইয়া দুলিতেছে। বিমল উপাধানে পৃষ্ঠ রাখিয়া অর্দ্ধ শয়ন, অৰ্দ্ধ উপবেশন করিয়া রহিয়াছেন; বিমলা মুকুরে নিজ লাবণ্য দেখিয়া হাস্য করিলেন। বিমলা এই ভাবিয়া হাসিলেন যে, দিগ্গজ পণ্ডিত নিতান্ত নিষ্কারণে গৃহত্যাগী হইতে চাহেন নাই।
বিমল জগৎসিংহের পুনরাগমন প্রতীক্ষা করিয়া আছেন, এমত সময়ে আম্রকাননমধ্যে গম্ভীর তুর্য্যনিনাদ হইল। বিমলা চমকিয়া উঠলেন এবং ভীতা হইলেন; সিংহদ্বার ব্যতীত আম্রকাননে কখনই তুর্য্যধ্বনি হইয়া থাকে না; এত রাত্রেই বা তুর্য্যধ্বনি কেন হয়? বিশেষ সেই