পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
দুর্গেশনন্দিনী

মৃদু শিশ্ দিতে লাগিনে। তচ্ছ্রবণমাত্রেই বৃক্ষান্তরাল হইতে একজন পাদুকা-শূন্য যোদ্ধা গবাক্ষ-নিকটে আসিয়া গৃহমধ্যে প্রবেশ করিল। সে ব্যক্তি প্রবেশ করিলে অপর এক ব্যক্তি আসিল। এইরূপে বহুসংখ্যক পাঠান-সেনা নিঃশব্দে দুর্গমধ্যে প্রবেশ করিল। শেষে যে ব্যক্তি গবাক্ষনিকটে আসিল, ওস্মান তাহাকে কহিলেন, “আর না; তোমরা বাহিরে থাক; আমার পূর্বকথিত সঙ্কেতধ্বনি শুনিলে তোমরা বাহির হইতে দুর্গ আক্রমণ করিও; এই কথা তুমি তাজ খাঁকে বলিও।”

 সে ব্যক্তি ফিরিয়া গেল। ওস্মান লব্ধপ্রবেশ সেনা লইয়া পুনরপি নিঃশব্দ-পদ-সঞ্চারে প্রাসাদারোহণ করিলেন; যে ছাদে বিমল বন্ধন দশায় বসিয়া আছেন, সেই ছাদ দিয়া গমন-কালে কহিলেন, “এই স্ত্রীলোকটি বড় বুদ্ধিমতী; ইহাকে কদাপি বিশ্বাস নাই; রহিম সেখ! তুমি ইহার নিকট প্রহরী থাক; যদি পলয়ানের চেষ্টা বা কাহারও সহিত কথা কহিতে উদ্যোগ করে, কি উচ্চ কথা কয়, তবে স্ত্রী-বধে ঘৃণা করিও না।”

 “যে আজ্ঞা” বলিয়া রহিম তথায় প্রহরী রহিল। পাঠান-সেনা ছাদে ছাদে দুর্গের অন্যদিকে চলিয়া গেল।