পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিবাহিত জীবনে ভ্রষ্টাচার
১৫

ভাল হইবে, কোনো কারণে এই কথা তাহাদের ভাল লাগিয়াছে। ইহারা ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের স্থুল বিচার করিয়া ভাবিয়াছিল, ঘোড় ও ভেড়ার ন্যায় মানুষ একই ভাবে সন্তান উৎপাদন করিবে। অগস্ত কোঁত তীব্র কটাক্ষ করিয়া বলিয়াছেন, যাহারা এই সব সামাজিক ব্যাধির চিকিৎসক বলিয়া নিজেদের পরিচয় দেন, তাহারা পশুচিকিৎসক হইলে জগতের মঙ্গল হইত, কারণ ব্যক্তি ও সমাজের জটিল মনোবৃত্তি বুঝিবার মত কোনো শক্তি তাহাদের নাই।

 ব্যাপার এই, বিষয়ভোগের সহিত সংশ্লিষ্ট মনোবৃত্তি ও সিদ্ধান্ত লোকের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে যতটা প্রভাব বিস্তার করে, মানুযের অপর কোনো মনোবৃত্তি, সিদ্ধান্ত ও অভ্যাস তাহা করে না। সে ইহাকে বাধা দিক এবং আয়ত্তে রাখুক, অথবা পরাজিত হইয়া ইহার প্রবাহে ভাসিয়া চলুক, তাহার কাজের প্রতিধ্বনি সামাজিক জীবনের বহুদূরবর্ত্তী স্থানেও পৌছিবে; কারণ প্রকৃতির নিয়ম এই যে, অত্যন্ত গুপ্ত কাজও আপনার প্রভাব বিস্তার না করিয়া পারে না।

 “যখন আমরা কোনোপ্রকার নৈতিক বন্ধন ছিন্ন করি, তখন আমরা ভাবি, আমাদের দুষ্কার্য্যে পরিণাম খারাপ হইবে না। প্রথমতঃ, নিজেদের সম্বন্ধে আমরা সন্তুষ্ট থাকি, কারণ আমাদের নিজেদের সুখ অথবা স্বার্থসাধনই আমাদিগকে এ কাজে নিয়োজিত করে; সমাজের সম্বন্ধে আমরা ভাবি, সমাজ এত উচ্চ যে ইহা আমাদের মত সামান্য লোকদের কুকার্য্য লক্ষ্য করিবে না; সর্ব্বোপরি আমরা মনে মনে আশা করি যে, অপর সকলে পবিত্র ও সদাচারী থাকিবে। ইহার সর্ব্বাপেক্ষা শোচনীয় কুফল এই যে, যতদিন এই দোষ অল্প লোকের ভিতর সীমাবদ্ধ থাকে ততদিন উপরোক্ত কাপুরুষোচিত হিসাব প্রায়ই ঠিক হইয়া থাকে; কিন্তু তাহার ফলে মানুষের এই মনোভাব ক্রমে বদ্ধমূল