পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
দুর্নীতির পথে

স্বাধীনতা বলিতে হয়, তবে এ জন্য গর্ব্ব করার কিছু নাই। যদি খাঁটি স্বাধীনতা চাই, তবে যেন কোমর বাঁধিয়া স্থায়ী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হই। একতা, সাম্য এবং স্বাধীনতা সম্বন্ধে কিছু বুলি কপচাইয়া গর্ব্বভরে আমরা ভাবি যে, আমরা ভগবানের অমর সন্তান। কিন্তু এই ‘আমি'কে ধরিতে চেষ্টা করিলে, ‘আমি’র খোঁজ পাই না; ইহা অসংখ্য স্বতন্ত্র প্রাণীতে পরিণত হইবে—ইহারা একে অপরকে অস্বীকার করে, ইহাদের ইচ্ছাও পরস্পরবিরোধী—এই সব ইচ্ছার সমষ্টি লইয়াই আমি। যে সব কুসংস্কার এবং প্রলোভনের অধীন আমি হইয়া থাকি, আমি তাহাই। আমার এই স্বাধীনতা ইন্দ্রিয়ের দাসত্ব ভিন্ন আর কিছুই নহে—এই দাসত্বকে অবশ্য আমি দাসত্ব মনে করি না এবং বাধা দেই না।”

 রায়সেন বলেন, “সংযম শান্তির এবং অসংযম অশান্তিরূপ মহাশত্রুর উৎস। কামেচ্ছা সব সময় বিপদসঙ্কুল। কিন্তু যৌবনে ইহা ভয়ানক অধঃপতনের কারণ হইতে পারে। ইহা আমাদের ইচ্ছাশক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিকে বিলকুল বিগড়াইয়া দিতে পারে। যে যুবক প্রথমবার কোনো স্ত্রীলোকের সহিত মিলিত হয়, সে জানে না যে, এরূপে সে তাহার শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক জীবন লইয়া খেলা করিতেছে; সে ইহাও জানে না যে, এই ইন্দ্রিয়তৃপ্তির কথা ভবিষ্যতে তাহার স্মৃতিপটে উদিত হইয়া তাহাকে বার বার যাতনা দিবে এবং সে আপনার ইন্দ্রিয়ের হীন দাসরূপে পরিণত হইবে। এমন অনেক লোকের কথা জানি, যাহাদের নিকট লোকে অনেক কিছু আশা করিয়াছিল, কিন্তু যাহারা গোল্লায় গিয়াছে—প্রথম বারের নৈতিক পতন হইতেই তাহাদের অধঃপতন শুরু হইয়াছে।”

 কবিও দার্শনিকের কথার প্রতিধ্বনি করিয়া বলিতেছেন, “মানুষের