পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজীবন ব্রহ্মচর্য্য
৩১

স্থলে ন্যায়সঙ্গত। প্রসিদ্ধ চিত্রশিল্পী মাইকেল এঞ্জেলোকে কেহ বিবাহ করিতে বলিলে তিনি কহিয়াছিলেন, “আমার পত্নী চিত্রবিদ্যা বড় হিংসুটে; তিনি সতীন বরদাস্ত করবেন না।”

 যাঁহারা আজীবন ব্রহ্মচর্য পালন করিয়াছেন, এইরূপ সকল প্রকার ইউরোপীয় বন্ধুর অভিজ্ঞতার বিবরণ বুরে সাহেব তাঁহার পুস্তকে লিপিবদ্ধ করিয়াছেন। তাহাদের কথা উদ্ধৃত করিয়া আমি উপরের উক্তি সমর্থন করিতে পারি। শুধু ভারতেই শিশুকাল হইতে আমাদিগকে বিবাহের কথা শুনান হয়। বালকদের বিবাহ দেওয়া এবং তাহাদের জন্য যথেষ্ট অর্থ সম্পদ রাখিয়া যাওয়া ভিন্ন মাতাপিতার অন্য চিন্তা অন্য উচ্চাকাঙ্ক্ষা নাই। প্রথমটি অকালে বুদ্ধি ও শরীর ধ্বংস করে, দ্বিতীয়টি অলসতার প্রশ্রয় দেয় এবং অনেক সময় লোককে পরগাছার ন্যায় করিয়া তোলে। ব্রহ্মচর্য্য ও দারিদ্র-ব্রতের কঠোরতাকে আমরা অতিরঞ্জিত করিয়া থাকি এবং বলি ইহা পালন করিতে হইলে অসাধারণ শক্তির দরকার। এ দুটি জিনিষ আমরা মহাত্মা ও যোগীর জন্য রাখিয়া দি; একথা আমরা ভুলিয়া যাই, যেখানে সাধারণ লোকের অবস্থা হীন সেখানে সাচ্চা মহাত্মা ও যোগীর উদ্ভব সম্ভব নহে। সদাচারের গতি কচ্ছপের গতির ন্যায় ধীর অথচ অবাধ, কিন্তু দুরাচার শশকের ন্যায় দ্রুত চলে। এই হিসাবে পশ্চিমের ব্যভিচারের সওদা বিদ্যুৎগতিতে আমাদের নিকট আসে ও আপনার মনোমমাহিনী চাকচিক্যের দ্বারা আমাদের চোখ ঝলসাইয়া দেয় এবং আমরা সত্যকে ভুলিয়া যাই। প্রতি মুহূর্ত্তে পশ্চিম হইতে যে তার আসিতেছে, প্রতিদিন পাশ্চাত্য দেশের মাল বোঝাই হইয়া যে জাহাজ এখানে পৌছিতেছে, এবং এইরূপে যে চটকদার জিনিষ আসিতেছে, তাহা দেখিয়া ব্রহ্মচর্য্যব্রত পর্যন্ত গ্রহণ করিতে আমরা লজ্জিত হইতেছি এবং দারিদ্র্য-ব্রতকে পাপ বলিয়া ঘোষণা