পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
দুর্নীতির পথে

করিতে প্রস্তুত হইয়াছি। পরন্তু ভারতবর্ষে আমরা পশ্চিমের যে রূপ দেখিতেছি, পশ্চিম সম্পূর্ণরূপে তাহা নহে। দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গগণ সেখানকার ভারতীয় বাসিন্দাদিগকে দেখিয়া, সমস্ত ভারতবাসীর চরিত্র সম্বন্ধে একটা ধারণা পোষণ করিয়া যেমন ভুল করে, সেইরূপ ইউরোপ হইতে প্রতিদিন যে লোকজন ও মালপত্রাদি আসিতেছে, তাহা দেখিয়া পাশ্চাত্য দেশ সম্বন্ধে ধারণা করা আমাদের ভুল হইবে। যাহারা এই ভ্রমের পরদা সরাইয়া ভিতরের বস্তু দেখিতে সক্ষম, তাহারা দেখিতে পাইবেন যে, পশ্চিমেও পবিত্রতা এবং শক্তির একটি ক্ষুদ্র অথচ অফুরন্ত উৎস আছে। ইউরোপের মহা মরুভূমিতেও এরূপ সব ঝরণা আছে, যেখানে যে-কেহ ইচ্ছা করিলে সর্বাপেক্ষা পবিত্র জীবনবারি পান করিয়া তৃপ্ত হইতে পারে। সেখানকার শত শত স্ত্রীপুরুষ স্বেচ্ছায় ব্রহ্মচর্য ও দারিদ্র্য-ব্রত গ্রহণ করিয়া থাকেন, এ জন্য কেহ ভুল করিয়াও গর্ব অথবা হৈ চৈ করেন না। তাঁহারা নম্রতার সহিত স্ব-জন অথবা দেশসেবার জন্য ইহাতে ব্রতী হইয়া থাকেন। আমরা বলিয়া থাকি যে, ধর্ম্মের সহিত সংসারের সাধারণ কাজের কোনো সম্বন্ধ নাই এবং যে সব যোগী হিমালয় পর্ব্বতস্থ বন অথবা গুহায় একান্তবাস করিতেছেন ধর্ম্ম শুধু তাঁহাদের জন্য। যে আধ্যাত্মিকতা লোকের দৈনন্দিন জীবনের সহিত সম্পর্কশূন্য, যার প্রভাব সংসারের উপর পড়ে না, তাহা আকাশ কুসুম ভিন্ন আর কিছুই নহে। সপ্তাহে সপ্তাহে যাহাদের জন্য ‘ইয়ং ইণ্ডিয়া’ লেখা হয়, সেই সব যুবক যুবতী জানিয়া রাখুন যে, যদি তাহারা তাহাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থা পবিত্র করিতে এবং দুর্ব্বলতা পরিহার করিতে চান, তবে ব্রহ্মচর্য্য ব্রত পালন করা তাহাদের কর্ত্তব্য; তাহাদের ইহাও জানা দরকার, তাহারা যেরূপ শুনিয়া আসিতেছেন, ব্রহ্মচর্য্য পালন করা তত কঠিন নহে॥