পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিবাহ সংস্কার
৩৯

মূল্য নির্দ্ধারণ করিতে হইলে নিম্নলিখিত প্রশ্নটির উত্তর দিতে হইবে। কোন্ আদর্শে চলিলে আমাদের সমগ্র সামাজিক জীবনের গভীরতা ও শক্তি বৃদ্ধি হইবে? কিসে সর্ব্বদা আমাদের দায়িত্বজ্ঞান ও ত্যাগ প্রবৃত্তি বাড়িবে এবং লোভ, চঞ্চলতা ও উচ্ছৃঙ্খলতা কমিবে? এই সব দিক হইতে বিষয়গুলি বিবেচনা করিলে সন্দেহ থাকে না যে, এক-বিবাহ প্রথাই সকল উন্নত সভ্যতার অংশ এবং প্রকৃত উন্নতি বিবাহবন্ধনকে শিথিল না করিয়া নিবিড় করে। দায়িত্বজ্ঞান, সহানুভূতি, আত্মসংযম, সহিষ্ণুতা এবং পরস্পরের নিকট শিক্ষালাভ করা—সামাজিক জীবনের পক্ষে প্রয়োজনীয় এই সব গুণের শিক্ষাক্ষেত্র পরিবার। পরিবার শিক্ষার এই কেন্দ্রস্থানটি অধিকার করিয়া রহিয়াছে, কারণ পারিবারিক বন্ধন অচ্ছেদ্য ও চিরস্থায়ী এবং এই স্থায়িত্বের দরুণ পারিবারিক জীবন অন্য প্রকার জীবন অপেক্ষা গভীরতর, দৃঢ়তর এবং পরস্পর মিলনের পক্ষে অধিক উপযোগী। এক-বিবাহ প্রথাকে মানুষের যাবতীয় সমাজব্যবস্থার মর্ম্মস্থল বলা যাইতে পারে।”

 তারপর বুরো অগস্ত কোঁত্ এর লেখা উদ্ধৃত করিতেছেন, “আমাদের হৃদয় এত চঞ্চল যে, ইহার চঞ্চলতা ও খেয়ালসমূহ সংযত রাখার জন্য সমাজকে হস্তক্ষেপ করিতে হয়; নতুবা মানুষের জীবন কতকগুলি অকিঞ্চিৎকর ও অর্থহীন অভিজ্ঞতার সমষ্টি মাত্র হইয়া পড়ে।

 ডাক্তার টুলু বলেন, ‘প্রণয়প্রবৃত্তি অদম্য এবং ইহার দাবী যে-কোনো উপায়ে পূরণ করিতে হইবে এই ভ্রান্ত ধারণা বহু দম্পতির সুখের অন্তরায় হইয়া থাকে। প্রবৃত্তির কবল হইতে ক্রমশ মুক্ত হওয়াই কিন্তু মানুষের। মনুষ্যত্ব বৃদ্ধি ও তাহার ক্রমবিকাশের চিহ্ন স্বরূপ। বাল্যকালেই মানুষ তাহার স্থুল অভাবগুলি দমন করিতে চেষ্টা করিবে এবং বয়সের পরিণতির সঙ্গে সঙ্গে তাহাকে প্রবৃত্তি-সংযম শিখিতে হইবে। ইহা