পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উপসংহার
৪৫

 শ্রীযুক্ত এণ্ডরুজ সাহেব ‘অন্তর্জনন ও জনন' সম্বন্ধে বহু তথ্যপূর্ণ সুন্দর একটি প্রবন্ধ আমার নিকট পাঠাইয়াছেন। ইহা শ্রীযুক্ত উইলিয়াম লোফ‍্টাস কর্ত্ত‌ৃক লিখিত এবং ১৯২৬ সালের মার্চ্চ মাসের ‘ওপেন কোর্ট' পত্রিকায় বাহির হয়। প্রবন্ধটি সুচিন্তিত এবং বৈজ্ঞানিক ভাবে লিখিত। লেখক দেখাইয়াছেন, সকল প্রাণীর শরীরে এই দুটি কাজ চলে—শরীরগঠন বা আভ্যন্তরীণ সৃষ্টি এবং জীবপ্রবাহ রক্ষার জন্য বাহিরের সৃষ্টি। এই প্রক্রিয়াকে তিনি যথাক্রমে অন্তর্জনন ও জনন নাম দিয়াছেন। অন্তর্জনন বা আভ্যন্তরীণ গঠন ব্যক্তির জীবনের ভিত্তি, এজন্য ইহা মুখ্য কাজ। জনন ক্রিয়া শরীর-কোষের আধিক্য হেতু হয়, এজন্য ইহা গৌণ। অতএব জীবন রক্ষার জন্য প্রথমত শরীর-কোষের পূর্ণতা দরকার; তারপর জননের কাজ চলিবে। যেখানে শরীর-কোষ অপূর্ণ, সেখানে প্রথমে শরীর গঠনের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া জনন ক্রিয়া বন্ধ রাখিতে হইবে। এইরূপে আমরা জনন-ক্রিয়া স্থগিত রাখার এবং সংযম বা ইন্দ্রিয়নিগ্রহের মূল পর্যন্ত পৌছিতে পারি। আভ্যন্তরীণ গঠন স্থগিত রাখিলে মৃত্যু অনিবার্য—ইহাই মৃত্যুর কারণ। শরীর-গঠনের কাজ বর্ণনা করিতে গিয়া লেখক কহিয়াছেন, “সৃষ্টি-প্রবাহ রক্ষার জন্য সভ্য মানুষ প্রয়োজনের অপেক্ষা অনেক বেশী বীর্য্যনাশ করে; ফলে শরীর গঠন ক্রিয়ার ব্যাঘাত হয় এবং ব্যাধি ও অকালমৃত্যু প্রভৃতি দেখা দেয়।

 হিন্দু-দর্শনের সামান্য জ্ঞান যাহার আছে, শ্রীযুক্ত হেয়ার সাহেবের প্রবন্ধ হইতে উদ্ধ‌ৃত নীচের অংশটি বুঝিতে তাহার কোন অসুবিধা হইবে না। “অন্তর্জনন কলের কাজের ন্যায় সম্বন্ধশূন্য নহে; ইহাতে লাশের পরিচয় পাওয়া যায়; অর্থাৎ ইহার মধ্যে বুদ্ধি এবং ইচ্ছাশক্তি প্রকাশ দেখিতে পাই। ইহা চিন্তা করা অসম্ভব যে, জীবনের কাজ নির্জীব