পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
দুর্নীতির পথে

কলের মত চলে। এ কথা সত্য যে আমাদের বর্ত্তমান চেতনা হইতে এই প্রাণশক্তির ক্রিয়া এত দূরে যে, দেখিয়া মনে হয়, মানুষ অথবা অপর জীবের ইচ্ছাশক্তি দ্বারা ইহা নিয়ন্ত্রিত হয় না। পরন্তু সামান্য চিন্তা করিলেই ধারণা করিতে পারি যে, বয়ঃপ্রাপ্ত লোকের বাহিরের গতিবিধি ও কাজ যেরূপ বুদ্ধির নির্দেশ অনুসারে ইচ্ছাশক্তি কর্ত্ত‌ৃক নিয়ন্ত্রিত হয়, শরীর-গঠনের উপর সেরূপ বুদ্ধি ও ইচ্ছাশক্তির প্রভাব থাকা চাই। মনোবিজ্ঞানবিদ ইহাকে অগোচর বলেন। আমাদের নিত্য-নৈমিত্তিক সাধারণ চিন্তার বাহির হইলেও ইহা আমাদের সহিত অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আমাদের চৈতন্যও সময় সময় সুপ্ত অবস্থায় থাকে। কিন্তু ইহা আপনার কাজে এরূপ জাগ্রত ও সাবধান যে, ক্ষণকালের জন্যও ইহা নিদ্রিত হয় না।

 শুধু শারীরিক সুখের জন্য বিষয়ভোগকরিলে আমাদের এই অগোচর ও অবিনশ্বর অংশের যে মহান ক্ষতি হয়, তাহার পরিমাণ কে করিতে পারে? জননের ফল মৃত্যু। সঙ্গমের ফলে পুরুষ মৃত্যুর দিকে অগ্রসর হয় এবং প্রসবক্রিয়া নারীর পক্ষে মৃত্যুতুল্য। এজন্য লেখক বলেন, “যাহারা অনেকাংশে সংযমী অথবা সম্পূর্ণ ব্রহ্মচারী, তাহারা পুরুষত্ব ও জীবনীশক্তিসম্পন্ন এবং রোগহীন হইবেই। যে বীজকোষ উর্দ্ধগতি হইয়া শরীর গঠন করিবে, তাহাকে নামাইয়া আনিয়া জনন অথবা শুধু ভোগের কাজে লাগাইলে, দেহের ক্ষয় পূরণে বাধা পড়ে; ইহাতে ধীরে ধীরে, কিন্তু সুনিশ্চিতরূপে, দেহের মহা ক্ষতি হয়। এই সব ব্যাপার স্ত্রী-পুরুষের ইন্দ্রিয়সেবার ভিত্তি। ইহা হইতে সম্পূর্ণরূপে ইন্দ্রিয় দমন করিবার শিক্ষা না পাইলেও সংযম শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা যায়—অথবা কোনো প্রকারে কিছু না কিছু সংযমের মূল নীতি বুঝা যায়। লেখক রাসায়নিক দ্রব্য অথবা যন্ত্রপাতির সহায়তা