পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৬৭
দুর্নীতির পথে
৬৭

কাম ও প্রেম অশ্রদ্ধা লইয়া এই কাম-জগৎ সৃষ্টি হয়। কাম কি চায় ? কাম চায় যাহার দাবী সে সর্বাপেক্ষা তীব্রভাবে অনুভব করে সেই একের অর্থাৎ ‘অহং'এর স্বার্থ। প্রত্যেক জীব, প্রত্যেক বংশ, প্রত্যেক জাতির মধ্য দিয়া এই স্বার্থানুসন্ধান চলিতে থাকে—ইহার বেগ ও কুরতা ক্রমেই বাড়িতে থাকে এবং পরিশেষে ইহা জগৎব্যাপী সমরে (যেমন সম্প্রতি হইয়াছে) পরিণত হয়। ইহা অসংখ্য বার রূপান্তর গ্রহণ করিয়া অগ্রসর হয়, বুদ্ধির সহায়ে সহস্রপ্রকার যান্ত্রিক এবং অর্থনৈতিক উপায় অবলম্বন করে। বর্তমানে ইহা আধুনিক সভ্যতারূপে মূর্তিমান হইয়াছে। এখন জিজ্ঞাস্য এই, প্রাণের এই প্রাকৃত আকর্ষণ অথবা কাম সম্বন্ধে খৃষ্টান ধর্মের উপদেশ কি? ইহাকে কি তুচ্ছ, দমন কিংবা নিৰ্ম্মল করিতে হইবে ? অথবা ইহার গতি অব্যাহত রাখিয়া ইহার উদ্দেশ্য সফল হইতে দিতে হইবে? কাম সম্বন্ধে যাবতীয় উপদেশ এই কয়টি সরল কথার মধ্যে পাওয়া যায়-“তােমাদের কি কি বস্তুর প্রয়ােজন তােমাদের স্বর্গীয় পিতা তাহা জানেন” এবং “প্রথমে তােমর ঋত এবং স্বর্গরাজ্য লাভ করার চেষ্টা কর, এই সকল বস্তু তখন আপনা হইতেই তােমাদের হইবে।” কামকে নষ্ট করিবার প্রয়ােজন নাই, উহাকে শুদ্ধ করিতে হইবে। এরূপে খৃষ্ট-নির্দিষ্ট উচ্চতর লক্ষ্যে পৌছিতে পারিলে ‘পূর্ণতর জীবন লাভ হইবে। তাহাতে শুদ্ধিকৃত কামের স্থান আছে। এইখানেই আমরা আসল খৃষ্টীয়-প্রেমের সাক্ষাৎ পাই। বাইবেলে ইহাকেই (agape) প্রেম বলা হইয়াছে। কিসে ইহা কাম হইতে ভিন্ন তাহা আমাদের বুঝিতে দেরী হয় না। কামের অননুরূপ এই প্রেম বাক্তির ইচ্ছাসাপেক্ষ। যাহা সাধারণ আকর্ষণ বিকর্ষণের উপরে ইহা সেই সশ্রম করুণা। ইহা শক্ত মিত্র উভয়কে সমভাবে দেওয়া যাইতে পারে।