পাতা:দৃষ্টিপ্রদীপ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শূন্যপণে অদৃশ্য চরণে দেবদেবীরা যেন এই সন্ধ্যায় ওখানে নেমে আসেন। যখন নদীজল শেষরৌদ্রে চিন্তু চিক করে, কুলে কুলে অন্ধকার ফিরে আসে, পানকলস শেওলার ফুল কালো জলে সন্ধ্যার ছায়ায় ঢাকা পড়ে যায়-তখনই । আমার মনে সব ওলট-পালট হয়ে গেল, এমন এক দেবতার ছায়া মনে নামে- যেন জ্যাঠাইমাদের শালগ্ৰামশিলার চেয়ে বড়, আটঘরা বটতলার সেই পাথরের প্রাচীন মুক্তিটির চেয়ে বড়, মহাপুরুষ শ্ৰীস্টের চেয়েও বড়-চক্রবালরেখায় দূরের স্বপ্নরূপে সেই দেবতারই ছায়া, এই বিশাল প্রাস্তরে মান সন্ধ্যার রূপে মাথার ওপর উড়ে-যাওয়া বালিহঁাসের সঁাই সঁই পাখার ডাকে। -- সেই দেবতা আমায় পথ দেখিয়ে দিন । আমি যা হারিয়েছি তা আর চাই নে, আমি চাই আজকার সন্ধ্যার মত আনন্দ, এবং যে নতুন দৃষ্টিতে এই এক মুহূৰ্ত্তের জন্যে জগৎটাকে দেখেছি সে দৃষ্টি হারিয়ে যাবে জানি, সে আনন্দ জীবনে অক্ষয় হবে না জানি-কিন্তু আর একবারও যেন অন্ততঃ তার আসে। আমার জীবনে । SS পরদিন দুপুরে সন্ধান মিলল ক্রোশ-চারেক দূরে দ্বারবাসিনী গ্রামে একটি প্রসিদ্ধ আখড়াবাড়ি আছে, সেখানে মাঝে মাঝে ভাল ভাল বৈষ্ণব সাধু আসেন। গায়ের বাইরে আখড়াবাড়, ( 3 ( 1 সন্ধ্যার সামান্য আগে দ্বারবাসিনীর আখড়াবাড়িতে পৌছলাম। গ্রামের প্রান্তে একটা পুকুরের ধারে অনেকগুলো গাছপালা-ছায়াশূন্য, কঁাকরভরা, উষর ধুধু মাঠের মধ্যে এক জায়গায় টলটলে স্বচ্ছ জলে ভরা পুকুর । পুকুরপাড়ে বকুল, বেল, অশোক, তমাল, নিম গাছের ছায়াভৱ ঘনকুঞ্জ, দু-চারটে পাখীর সান্ধ্যকাকলি-মরুর বুকে শু্যামল মরুদ্বীপের মত মনে হ’ল। এ-অঞ্চলে এর নাম লোচনদাসের আখড়া । আমি যেতেই একজন প্রৌঢ় বৈষ্ণব, গলায় তুলসীর মালা, পরনে মোটা তসরের বহিব্বাস, উঠে এসে জিজ্ঞেস করলে,-কোথেকে আসা হচ্চে বাবুর ? তারপর তালপাতার ছোট চাটাই পেতে দিলে বসতে, হাত-মুখ ধোয়ার জল নিজেই এনে দিলে। গোলমত উঠোনের চারিধারে রাঙা মাটির দেওয়াল-তোলা ঘর, সব ঘরের দাওয়াতেই দুটি-তিনটি বৈষ্ণব, খুব সম্ভবতঃ আমার মতই পথিক, রাত্রের জন্য আশ্রয় नि८श्नgछ । সন্ধ্যার পরে আমি তালপাতার চাটাইয়ে বসে একটি বৃদ্ধ বৈষ্ণবের একতারা বাজনা ও গান শুনাচি--এমন সময় একটি মেয়ে আমার সামনে উঠোনে এসে জিজ্ঞেস করলে-আপনি ब्रांख्रिश्न कि थांबन-? R,