পাতা:দৃষ্টিপ্রদীপ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

--সেটা তিনকড়িদের দিয়ে দিইছি। দু-দিনের মত খানিকটা গুড় ওই বাটিতে রেখেছি --দুটো দিন ওতেই চলে যাবে। 邻 হিরন্ময়ী অন্য দিনের মত বসল না, দাডিযে রইল। একবার বাইরে যাবার সময় ও সরে দরজাব কপাটের আর দেওযালেব মধ্যের যে জায়গাটুকু, সেখানটাতে দেখি জডসড হযে দাড়িযেছে। বলতে গেলাম-ওখানে না, ওখানে না-কাপডে কালিটালি লেগে যাবে কি না। -বার হযে এস ওব মুখের দিকে চেযে দেখি ওর ডাগর চােখ দুটি জলে ভ’রে টলটল করছে। হিরন্ময়ীর চোখে জল । অবাক, এ দৃশ্য তো কখনও দেখি নি। ও জল-ভরা ধরা-গলায্য বললে-আপনি বলুন, যাবেন না মাস্টার মশায । আমি তখন পাঠশালায বলতে পারলাম না। ওদের সামনে। ওরা হাসবে তাহ’লে। আর কেউ নয-আর সবাই আমায় ভষ করে, কেবল ওই মণ্টটাে बछ कुछ्रे । তারপর আমার দিকে চোখের জল আবি হাসি-মিশানো এক অপূর্ব দৃষ্টিতে চেয়ে বললেস্বাবেন না, কেমন ? হিরণাষী এই প্ৰথম দুর্বলতা প্ৰকাশ কবলে-এব। আগে কখনও দেখি নি। ছেলেমানুষ, ও কথা ত তেমন জানে না, কিন্তু ওর ভােগর সজল চোখেব মিনতিপূর্ণ দৃষ্টি ওর ভাষার দৈন্য ঘুচিষে দিয়ে এমন কিছু প্ৰকাশ করলে--এক জাহাজ কথাতে তা প্ৰকাশ করা যেত না। আমার মনে অনুতাপ হ’ল-কেন ওকে মিথ্যে কঁদোলাম সন্ধ্যাবেলাটিতে ? জীবনের এই-সব মুহূৰ্ত্তেই না মানুষে ভগবানকে প্ৰত্যক্ষ করে ? ব্রাউনিঙের ‘পলিন কবিতার সেই সর্বহার লোকটির মত আমার মনও ব’লে উঠল। :-I believe in God and Truth and Love to ওর হাতটি ধ’রে দরজার কপাটের ফাকি থেকে বার ক’রে এনে আস্তে আস্তে পিন্ডির ওপর বসিয়ে দিয়ে বললাম-ওখানে সন্ধ্যাবেলা দাডাতে নেই। বিছোঁটিছে বেরুতে পারে-এখানে বোস। রুটিগুলো বেলে দাও দিকি, লক্ষ্মী মেয়ে। আমি যাব না-বলছি তুমি যখন, তখন আর যাব না । চোখের জল ফেলতে আছে অবেলায় ? ছিঃ তার পরই রুটি তৈরী করতে ব’সে যে হিরন্ময়ী সেই হিরন্ময়ী-সেই মুখরা বালিকা, যে সকল কথা এমন কর্তৃত্বের সুরে বলে যেন ওর কথা না মেনে চললে ও ভয়ঙ্কর একটা কিছু শাস্তির ব্যবস্থা করবে, সেটা আবার খুব কৌতুকপ্রদ এবং ভেবে দেখলে করুণ বলেই মনে হয়, যখন বেশ বুঝতে পারা যাচ্ছে যে মুখের বুলিচুকু ছাড ওর হুকুমের পেছনে ওর কোন জোর খাটাবার নেই-নিতান্ত অসহায় ও নিরুপায়। প্ৰেম আসে এই সব সামান্য তুচ্ছ খুঁটিনাটি সূত্র ধ’রে। বড় বড় ঘটনাকে এড়ানো Strë