পাতা:দৃষ্টিপ্রদীপ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাবতুম। কত ভেবেছি। এখন বুঝি কি দুজয় আভমান করেই চলে এসেছিলাম ওর কাছ থেকে ! কিছুতেই সে অভিমান ভাঙলো না । তার পর দাদা মারা গেলেন, দাদার সংসার পড়ল ঘাড়ে, নইলে হয়ত আবার এতদিনে ফিরে যেতাম। কিন্তু বৌদিদিদের নিয়ে তো দ্বারবাসিনীর আখড়াতে গিয়ে উঠতে পারি। নে ? একসময় যার ভাবনায় কত বিনিদ্র রাজনী কাটিয়েছি বটেশ্বরনাথ পাহাডে, সেই মালতী এখন আমার মনে ক্ৰমশঃ অস্পষ্ট হয়ে আসছেহয়ে এসেছে। আর তো তাকে চোখে দেখলুম না ? ক্রমে তাই সে দুরে গিয়ে পড়ল। বি করব, মনের ওপর জোর নেই-নইলে আমি কি বুঝতে পারি। নে কত বড ট্র্যাজেডি এটা মানুষের জীবনের ? শ্ৰীরামপুরের ছোট-বৌঠাকুরুণ আজ কোথায় ? কে বলবে কেন এমন হয় ! በ Sዓ ዘ একদিন আবাব হিরন্ময়ীকে দেখবার ইচ্ছে হ’ল। তখন মাস দুই কেটে গিয়েছে, কামালপুণে আর যাই নি, সেখানে আমার বাসায় জিনিসপত্র এখনও বয়েছে-সেগুলো আনবার ছুতে করেই গেলুম। সেখানে । মাস দুই পরে, গ্রাম ঠাণ্ডা হয়েছে, কেবল শুনলুম। হিবগ্নয়ীরা একঘ;ে হয়ে আছে। হিরন্ময়ী আগের মতই ছুটে এল আমি এসেছি শুনে। এখানে ওর চরিত্রে একটা দিক আমার চোখে পডল-লোকে কি বলবে এ ভয় ও কবে না-এখানে মালতীর সঙ্গে ওর মিল আছে। কিন্তু মালতীর সঙ্গে ওর। তফাৎও আমি বুঝতে পারি। হিরন্ময়ী যেখানে যাবে, সেখানে পেছন ফিরে আর চায় না-মালতীব নানা পিছুটান। সবাই সমান ভালোবাসতেও পারে না । প্রেমের ক্ষেত্রেও প্ৰতিভাব প্রয়োজন আছে। খুব বড় শিল্পী, বি খুব বড় গায়ক যেমন পথেঘাটে মেলে না-খুব বড় প্রেমিক বা প্ৰেমিকাও তেমনি পথেঘাটে মেলে না। ও প্রতিভা যে যে-কোন বড় স্বজনী-প্ৰতিভার মতই দুল্লভ। এ কথা সবাই জাগে না, তাই যার কাছে যা পাবার নয়, তার কাছে তাই আশা করতে গিয়ে পদে পদে ঘা খা, আর ভাবে অন্য সবারই ভাগ্যে ঠিকমত জুটছে, সে-ই কেবল বঞ্চিত হয়ে রইল। জীবনে। নয়। ভাবে তাব রূপগুণ কম, তাই তেমন ক’রে বাধতে পারে নি । হিরন্ময়ীর তনুলতায় প্রথম যৌবনের মঞ্জরী দেখা দিয়েছে । হঠাৎ যেন বেড়ে উঠেছে এই দু, মাসেব মধ্যে। আমায় বললে-কখন এলেন ? আম্বন আমাদের বাড়িতে। মা বরে দিলেন। আপনাকে ডেকে নিয়ে যেতে। কতদিনের ছুটি দিয়েছিলেন পাঠশালাতে, দেড় মা পরে খুললো ? --ভাল আছে। হিরণ ? উঃ, মাথায় কত বেড়ে গিয়েছ ? Sar