পাতা:দৃষ্টিপ্রদীপ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জিজেল ক’রে জানলাম ছেলের অনুখের জন্ধে ধর্ণা দেবার ইচ্ছে আছে। ওদেৱ । নিমচাঁদের বেী বললে-বুঝলেন দাদাঠাকুর, খোকার মামা ওর মুখ দেখে তিনটে টাকা দিলে খোকার হাতে। তখন পয়সার বড় কষ্ট যাচ্চে, কোষ্টা তখন জলে, কাচলি তো পয়সা ঘরে আসবে ? তো বলি, না, এ টাকা খরচ করা হবে না । এ রইল তোলা বাবার থানের জন্তি । মোহন্ত বাবার গদীতে দিয়ে আসিব । সেই দিন বিকেলে নিমচাঁদ ও তার বেী পুজো দিতে এল গদীতে। নবীন মুহুরী তাদের কাছে রোট-মত প্ৰণামী ও পূজোর খরচ আদায় করলে অবিশ্যি-ত ছাড নিমটাদের বৌ নিজের হাতে সেই তিনটে টাকা বডবাবুর সামনের রূপোর থালায় রেখে দিয়ে বড়বাবুর পায়ের ধুলো নিয়ে কোলের খোকার মাথায় মুখে দিয়ে দিলে। তার পর সে একবার চোখ তুলে মোহন্তদের দিকে চাইলে এবং এদের ঐশ্বৰ্য্যের ঘটাতেই সম্ভবত অবাক হয়ে গেল-বুদ্ধিহীন চোখে শ্ৰদ্ধা ও সম্রামের সঙ্গে টাকা-পয়সাতে পরিপূর্ণ ঝকঝকে রূপের থালাটার দিকে বার-কতক চাইলে, রঙীন শালু ও গাঁদা ফুলের মালায় মোড়া থামগুলোর দিকে চাইলোঁ-জীবনে এই প্ৰথম সে গোসাঁইয়েব থানে এসেচে, সব দেখেশুনে লোকের ভিডে, মোহস্ত মহারাজ্যের আড়ম্বরে, অনবরত বর্ষণরত প্ৰণামীর ঝমােঝমানি * আওয়াজে সে একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেল। কতক্ষণ ই ক’রে দাডিয়ে রইল, বাইরে থেকে ক্রমাগত লোক ঢুকচে, তাকে ক্ৰমশঃ ঠেলে একধারে সরিয়ে দিচ্চে, তবুও সে দাডিয়েই wat ওকে কে একজন ঠেলা দিয়ে এগিয়ে আসতে গেল, আমি ওর দিক থেকে চোখ ফেরাতে পারিনি। ওর মুখচোখের মুগ্ধ ভক্তিস্তব্ধ দৃষ্টি আমায়ও মুগ্ধ করেচে-এ এক নতুন অভিজ্ঞতা আমার জীবনের, এই বাজে শালুর বাহার আর লোকের হৈ চৈ আর মেজবাৰু, বন্ধুবাবুর চশমামণ্ডিত দাম্ভিক মুখ দেখে এত ভাব ও ভক্তি আসে।-ষে ঠেলা দিয়ে এদিকে আসছিল, আমি তাকে ধমক দিলুম। তার পর ওর চমক ভাঙতে ফিরে বাইরে বেরিয়ে � } ওরা চলে গেলে একটি বৃদ্ধ এল, তার বয়স অনেক হয়েচে, বয়সে গলার স্বর কেঁপে গিয়েচে, হাত কঁাপিচে, সে তার আঁচল থেকে একটি আধুলি খুলে থালায় দিতে গেল। নবীন্দ মুহুরী বললে-রও গো, রাখ-আধুলি কিসের ? বুড়ী বললে-এই-ই ঠা-কু-রে-র মা-ন-ত শো-ধে-র পে-ৱ-পা-মী- নবীন মুহুরী বললে-পাচ সিকের কমে ভোগের পুজো নেই-পাচ সিকিতে এক ঢাকা গীৱ নজার বুড়ী শুনতে পায় না, বললে-ক’ত ? e