পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 নবাব ― সুজা খাঁও এতদিন পরে বুঝিলেন, সাতরাজার ধন এক উজ্জ্বল মাণিক, বিধাতা তাঁহাকে দিয়াছেন। সেই মাণিকের স্নিগ্ধোজ্জ্বল জ্যোতিতে, আজ তাঁহার গৃহের প্রত্যেক কেন্দ্র উজ্জ্বলিত। এতদিন তিনি আনারের সৌন্দর্য্যের উপাসক ছিলেন, এখন তাহার গুণের যেন খুবই পক্ষপাতী হইয়া পড়িলেন।

 আনার তাঁহার গৃহলক্ষ্মী হইবার পর হইতে, নবাব সাহেব সেই শয়তানী বাহারবানুর স্মৃতি, তাঁহার মনের ভিতর হইতে ক্রমশঃ মুছিয়া ফেলিতে ছিলেন। খুবই সৌভ্যাগের কথা, যে বাহারবানু ঘটনাচক্রে পড়িয়া প্রায় দুই মাস হইল, আজমীরে চলিয়া গিয়াছে। কেন―তা সেই বলিতে পারে। যাইবার পূর্ব্বে, সে নবাব সুজাখাঁকে কোন সংবাদই দিয়া যায় নাই।

 নবাবের সাধের “আরাম-মঞ্জিলে, সুতরাং চাবি পড়িয়াছে। তিনি আর বড় একটা সেখানে যান না। এখন সেখানকার কক্ষগুলি শূন্য ও পরিত্যক্ত। যাহার জনয একদিন এই গুপ্ত আরামকক্ষের প্রয়োজন হইয়াছিল, সে ত আর আগরায় নাই।

 দেখিতে দেখিতে আরও একটা নাস কাটিয়া গেল। তবু বাহারের কোন সংবাদই নাই। কিন্তু তাহার জন্য নবাব সুজা খাঁ তিলমাত্র দুঃখিত নহেন। আর যেন ভবিষ্যতে তাহার কোন সংবাদ পাইতে না হয়, সে পাপ আর না আসিয়া জুটে, ইহাই যেন তাঁহার মনের কথা।

১০০