সরকারের দৌলতখানার হেপাজতকার। আমার হুকুম তোমাকে তামিল করিতেই হইবে!
আনার। আর আমি খোদ নবাব—বেগম—আনারউন্নিসা। নবাব সুজা খাঁর মালেক্— আমার খুস্ মেজাজের হুকুম, আমি গাহিতে পারিব না।
এই কথা বলিয়া আনারউন্নিসা একটী তীব্র কটাক্ষ নিক্ষেপ করিল। আর নবাব সুজা বেগ, এই কটাক্ষ-বিশিখ-বিষে জর্জ্জরিত হইয়া পরাজয় স্বীকার করিয়া, আনারকে স্নেহভরে বুকে জড়াইয়া ধরিলেন।
বারান্দার বাহিরে একটা হীরামন তাহার দাঁড়ের উপর বসিয়া দুলিতেছিল। সে সহসা কি একটা খেয়ালবশে, শিশ্ দিয়া উঠিল—“শিঃ—শিঃ—শিঃ।”
আনারউন্নিসা, সজোরে নবাবের আলিঙ্গন পাশ মুক্ত হইয়া সহাস্যমুখে বলিল—“ছিঃ ছিঃ নবাবসাহেব কর কি? পাখীটাও যে আমাদের অবস্থা দেখিয়া বিদ্রূপ করিতেছে।”
নবাব সুজা বেগ আনারের আরক্ত গণ্ড দুঢ়ী মৃদুভাবে টিপিয়া দিয়া বলিলেন—“অই—ছি—ছি আমার না তোমার, আনার উন্নিসা? পাখীটা বলিতেছে কি জান আনার? ছিঃ—ছিঃ প্রিয়তমের এক দণ্ডের অদর্শনে যে একটু আগে এতটা ব্যাকুল হইয়া পড়িয়াছিল, সে এখন তাহার প্রাণের জিনিসকে কাছে পাইয়া উপেক্ষা করিতেছে। তাই বলিতেছে— ছি! ছি!
১০৫