পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

আর, সমুজ্জ্বল বেশধারিণী, সদাহাস্যমুখী, রূপসীশ্রেষ্ঠা আনার উন্নিসা, মূর্তিময়ী আনন্দরূপে সুজাখাঁর নবপ্রতিষ্ঠিত এই নবীন নন্দনে বিরাজ করিতেছে।

 বোধ হয় বিধাতার সৃষ্টিতে অবিচ্ছিন্ন নির্ম্মল প্রেমের উপর যেন একটা অভিশাপ চিরদিনই লাগিয়া আছে। সুজাখাঁ ও আনার উন্নিসা তাঁহাদের পবিত্র দাম্পত্য জীবনটী, বড়ই সুখের সহিত অতিবাহিত করিতেছিলেন। কিন্তু এই দৈব অভিশাপের অলঙ্ঘনীয় ব্যবস্থায়, সেই অনাবিল সুখস্রোতে এবার ভাঁটা পড়িতে আরম্ভ হইল। একটী দিনের সামান্য একটী ঘটনাতেই ভবিষ্যতের একটা মহা বিপদের বীজ রোপিত হইল। শান্তিময় সংসারে অশান্তি ফুটিয়া পড়িল।

 ব্যাপারটী এই। নবাব সুজাখাঁ সে দিন শাহাজাদা দারার সহিত সাক্ষাৎ করিতে গিয়াছেন। ইহার কারণ এই, সুলতান দার। শেকো লাহোর হইতে ফিরিয়াই তাঁহাকে কোন জরুরি কাজের জন্য তলব করিয়াছিলেন।

 উজ্জ্বল মধ্যাহ্ণ। আনারউন্নিসা,একথণ্ড চতুষ্কোণ লাল মখ্ মলের উপর, সূচের সূক্ষ্ম কাজ করিতেছিল। এসব সাঁচ্চার শিল্প অতীত যুগের গৌরবের জিনিস। আর এইরূপ সূক্ষ্ম শিল্পে আনারের খুবই একটা নিপুণতা ছিল। সুতরাং মধ্যাহ্নের অবসর কালে সে অনেক সময় সূচীর সাহায্যে তার সংসারের প্রয়োজনীয়, রেশমী বস্ত্রের উপর অনেক রকমের চিকণের কাজ করিত। আবার কখনও বা ওমারখায়েম, সাদী, গুলেস্তাঁ পড়িয়া

১০৭