পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

সঞ্চয় করিয়াছ? না—আনারউন্নিসা! বাহারবানু তাহার জীবন থাকিতে তোমাকে নবাব সুজাখাঁর উপর একাধিপত্য করিতে দিবে না—তোমার এ স্পর্দ্ধা, এ দর্প সহ করিবে না।

 আনারউন্নিসা, বাহারবানুর এইরূপ অশিষ্টতাপূর্ণ ভয় প্রদর্শনে বড়ই ক্রুদ্ধ হইয়া উঠিল। সে রুষ্ট স্বরে বলিল “তুমি এখনই এস্থান হইতে চলিয়া যাও। না গেলে আমার ভৃত্যেরা তোমাকে অপমান করিয়া এখান হইতে তাড়াইয়া দিবে।

 বাহার। সাধ্য কি তোমার ভৃত্যদের—যে তাহারা আমার সম্মুখে অগ্রসর হয়! এক দিন যখন আমি নবাব সুজাখাঁর হৃদয়ের পূর্ণ অধিশ্বরী ছিলাম—তখন তোমার এই সব ভৃত্য আমার অনেক নিমক খাইয়াছে। ভৃত্যের প্রয়োজন কি? তোমার স্বামী নবাব সুজাখাঁকে না হয় একবার সংবাদ দাও। দেখি, তিনি নিজেই আমাকে তাড়াইয়া দিতে সক্ষম হন কি না?

 ঠিক এই সময়ে ঘটনাচক্র চালিত হইয়া, নবাব সুজাখাঁ সেই কক্ষ মধ্যে প্রবেশ করিলেন। প্রবেশ মাত্রেই যাহা দেখিলেন, তাহাতে তাঁহার মাথা ঘুরিয়া গেল। নির্জ্জন পথ-বাহী পথিক, সহসা কোন উন্নতফণা বিষধর সম্মুখে দেখিলে যেমন আতঙ্কে চমকিয়া দূরে সরিয়া দাঁড়ায়, নবাব সুজাখাঁ তাঁহার পত্নীর নিভৃত কক্ষ মধ্যে, এই কলঙ্কিতা বাহারবানুকে দেখিয়া, ততোধিক সন্ত্রস্ত হইয়া পড়িলেন।

 কিন্তু তাঁহার ক্রোধ সংবরণের একটা শক্তি ছিল। আভিজাত্য গৌরব ও মর্য্যাদার একটা দর্পও ছিল। তাঁহার শুদ্ধাত্তঃপুর কক্ষ

১১১