পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

হইয়া পড়িল। সে তখনই আত্মসংবরণ করিয়া লইয়া বলিল, “তবে—বলে থেমে গেলি যে? তোর এই “তবের” শেষটা আমাকে শুনতেই হবে।”

 বিধাতার বিধানে, নারীর পেটে কখনই কোন কথা বেশীক্ষণ লুকোনো থাকে না। কি একটা কথা বলিবার জন্য, জুমেলি খুবই ব্যাকুল। অথচ তার মনে একটা ভয়ও ছিল, যে পাছে আনারউন্নিসা সে কথা শুনিলে মনে কষ্ট পান। জিহ্বাকে সংযত করিতে না পারায়, সে যে একটা মহা ভুল করিয়া বসিয়াছে, আনারের মুখের মলিন ও গম্ভীর ভাব দেখিয়াই সে তাহা বুঝিয়া লইল। এজন্য সে কথাটা উড়াইয়া দিবার জন্য বলিল—“তোমার কেমন একটা একগুঁয়ে স্বভাব—যে খুব একটা ছোট কথা,তোমার কাণে উঠলে সেটা আর সহজে ভুলতে চাও না। বলি যে কথাটা শুনলে তোমার কোন লাভ নেই, তার জন্য এত পীড়াপীড়ি কেন?”

 আনারউন্নিসা কোনমতেই তাহার নির্ব্বন্ধ ত্যাগ করিল না দেখিয়া, জুমেলি প্রকারান্তরে বলিয়া ফেলিল—সে যেন নবাব সাহেবের মুখে গতরাত্রে সেরাজির গন্ধ পাইয়াছিল!

 কথাটা শুনিবামাত্রই, আনারউন্নিসার হৃদয়ে কাল মেঘের সঞ্চার হইল। সন্দেহের বাতাসে খুব জোরে পরিচালিত হইয়া, সেই খণ্ড মেঘগুলি একত্র জমায়েৎ হইয়া, যেন একটা মহাঝড়ের সূচনা করিল।

 স্বামীর চেয়ে রমণীর পক্ষে বিশ্বাসের পাত্র এ দুনিয়ায় আর

১৪০