পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

নাই! সুজা বেগ যদি নিরাশ হইয়া আমার নামে প্রাপ্য অর্থের জন্য কাজির দরবারে নালিশবন্দ হয়, তাহা হইলে ইজ্জত যে কেবল জন্মের মত যাইবে তাহা নয়, মাথা রাখিবার স্থানটুকু পর্য্যন্ত আমাদের থাকিবে না মা!”

 আনার উন্নিসা গভীর মনোযোগের সহিত পিতার কথাগুলি শুনিয়া বলিল,—“আপনি নবাবকে লিখিয়া পাঠান, এই সপ্তাহের মধ্যেই আপনি আমার বিবাহ দিতে প্রস্তুত। আর আমার বিবাহের কেবলমাত্র যৌতুক, ঐ ঋণপত্র।”

 কথাটা আনার উন্নিসা এতটা দৃঢ়তার সহিত বলিল, যে তাহা বলিতে তাহার স্বর একটুও কাঁপিল না, তাহার মুখ ভাবের কোন পরিবর্ত্তনই হইল না।

 জামাল খাঁ, কন্যার মুখে এই কথা শুনিয়া খুবই তৃপ্ত হইলেন। এই কথা গুলি বলিবার সময়, আনার উন্নিসার মনে একটা মহ। ঝড় উঠিতেছিল। কিন্তু নারীর স্বভাবসিদ্ধ সহিষ্ণুতার প্রচণ্ড শক্তির সহায়তায়, সে সেই মহা ঝড়টাকে এমন ভাবে চাপিয়া রাখিয়া পিতাকে তাহার মনের কথাগুলি বলিয়াছিল, যে জামাল খাঁ সেই কথা গুলিকেই, তাঁহার কন্যার মনের প্রকৃত ভাব মনে করিয়া, প্রফুল্ল মুখে তাহার কক্ষত্যাগ করিয়া চলিয়া গেলেন।

 চেষ্টা করিয়া আনারউন্নিসা তাহার পিতার সম্মুখে হৃদয়ে উত্থিত প্রচণ্ড ঝটিকাবেগকে অনেকটা প্রশমিত করিয়াছিল বটে, কিন্তু রাত্রের নির্জ্জনতার অবসরে সেই ঝটিকা আবার বলসঞ্চয়

৭২