দেবগণের অভিনব ভারত-দর্শন । এবং তাহার আত্ম-গ্লানি শ্রবণ করিয়া, তাহাকে মনে মনে ধন্যবাদ প্রদান করিলেন । অনন্তর এই চিন্তা তাহার মনে উদিত হইল— “ভুবন যাহা বলিল, সে কথাটি সত্য বটে ; যদি শান্তি ধৰ্ম্ম-পথে মতি রাখিয়, এই দারুণ বৈধব্য-দশী অতিক্রম করিতে পারে, তবেই তাহার আত্মাগ্রানি সার্থক হইবে।” কিছু কাল পরে তাহার মনে আর একটি চিন্তার উদয় হইল,—“হায় ! বাল-বৈধব্য কি কষ্ট প্রদ ! কি মৰ্ম্মভেদী ! কি হৃদয়-বিদারক ! জীবনের সুখ-শান্তি, আশা-ভরসা, যাহাকিছু চির কালের জন্য সব চলিয়া যায় ! স্বামীই স্ত্রীজাতির বন্ধু ; স্বামীই স্ত্রীজাতীর সখা ; স্বামীই মুখ, স্বামীই শান্তি ; স্বামীই জীবন, আর র্তাহার অভাবই মৃত্যু ! যে হতভাগিনী, সেই সংসারের সার, স্ত্রী-জীবনের আরাধ্য-দেবতা, প্রাণাধিক প্রিয়, স্বামী-রত্বের মৰ্ম্ম না বুঝে, তাহার সুখে সুখী ও দুঃখে দুঃখী না হয়, রোগের সময় তাহার সেবা-শুশ্ৰষা না করে, এবং তাহাকে ক্ষুধায় অন্ন, পিপাসায় জল, শোকে সাস্ত্ৰন ও বিপদে সদুপদেশ, ন দেয়,—সেই হতভাগিনী রমণীই, এমন রত্ব হইতে বঞ্চিত হয় ! অভিমানে অভীষ্ট দেবতা অতল গর্ভে ডুবিয়া যান ! হায় মা ভারতভূমি ! তোমার দুহিতৃগণ ত চিরকালই স্বামী সৰ্ব্বস্ব ছিলেন ; এক্ষণে র্তাহারা স্বামি-দ্বেষ ও স্বামি-পীড়ন কোথায় শিখিলেন ! এ দৃশ্য ত তোমাতে সম্পূর্ণ অভিনব ! মা ! তাই ত বলিতেছি, এদেশ আর সে দেশ নহে, এ এক অভিনব দেশ !” 2 s 3
পাতা:দেবগণের অভিনব ভারত দর্শন.djvu/১১৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।