দেবগণের অভিনব ভারত-দর্শন । নীলকান্ত ভট্টাচাৰ্য্য ও দুর্গানাথ চাটুয্যে মহাশয়দ্বয়ও হরনাথ চক্ৰবৰ্ত্তীর পক্ষই সমর্থন করিলেন । রায় মহাশয় ক্রোধে জ্বলিয়া উঠিয়া, সেস্থান পরিত্যাগ করিলেন ; অনুচরগণও তাহার অনুগমন করিল। হরনাথ অনেক দূর পর্য্যন্ত তাহাদের পশ্চাৎ পশ্চাৎ গমন করিল, কিন্তু কিছুতেই তাহাদের ক্রোধ প্রশমিত হইল না । এইরূপে হরপল্লী গ্রামে দুটি দলের সৃষ্টি হইল । গ্রামের অধিকাংশ লোকই, রায় মহাশয়দের পক্ষে রহিল ; অক্তি অল্প লোকেই হরনাথ চক্ৰবৰ্ত্তী মহাশয়ের পক্ষাবলম্বন করিল। নারায়ণ সমবেত ব্রাহ্মণম গুলার কথাবার্তা শ্রবণ ও কার্য্যকলাপ দর্শন করিয়া, ভাবিতে লাগিলেন, “হায় । ভারতের কি দুর্দশ ! কি শোচনীয় পরিণাম ; ফাউল ( মুরগীর মাংস ) ভিন্ন যাহার খাওয়া হয় না, গণিকার গৃহ ভিন্ন যাহার শয়ন হয় না, যিনি ব্রাহ্মণ হইয়া, দিবা ভাগে চতুর্ভোজনেও কুষ্ঠিত নহেন, যিনি ধৰ্ম্ম-ভয়-ভক্তির কোনও ধার ধারেন না, সেই ধৰ্ম্ম-দ্বেষী রামসুন্দর হলেন সমাজপতি ! যিনি মুখে বলেন, “হর হর,” মনে ভাবেন “পরের সর্ববনাশ কর,” এরূপ লোক যে সমাজের অধিপতি, সেই সমাজের কল্যাণ কোথায় ? হায় মা ! তোমার সন্তানগণের কপটতার আচ্ছাদন, আমরা আর কত কাল দর্শন করিব ? হায় ; সরল-মতি সাধু-পুরুষগণ নেতৃত্ব গ্রহণ না করিলে, পল্লী-সমাজ অচিরেই বিনষ্ট হইবে ? সামাজিক বন্ধুতা ও সহানুভূতির কমনীয় সূত্রও অচিরেই ছিন্ন হইবে । ভারতীয় নব্য-সমাজে, ভাল মানুষ হইলেই বিপদ ! ১ 8 ১
পাতা:দেবগণের অভিনব ভারত দর্শন.djvu/১৫৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।