দেবগণের অভিনব ভারত-দর্শন । ইহাপেক্ষ আনন্দের বিষয় আর কি হইতে পারে । বৎস ! আমি দেখিতেছি, রোগ এখন চিকিৎসাধীন ; এখনও গুরুর সদুপদেশ ও বিবেকের অনুশাসন একেবারে উপেক্ষিত হয় না ; ভারত-সন্তানগণ যত্ন ও চেষ্টা করিলে, এখনও পূর্ব গৌরবলাভে সমর্থ হইতে পরিবে ।” অতঃপর তাহারা আহার করিয়া, স্ব স্ব শয্যায় শয়ন করিলেন। তাহাদের মনে হইল, “এই কুটীরবাসী, ধৰ্ম্ম-মতি দম্পতীর ন্যায়, বহুকাল তাহাদিগকে এরূপ আদর ও যত্ব কেহ কখনও করে নাই। এমন তন্ময় ভাব, অন্য কোথায়ও উহাদের নয়নগোচর হয় নাই ! ব্রাহ্মণ ও ব্রাহ্মণী তাতিথি-সেবা করিয়া পরম গ্ৰীতি-লাভ করিলেন। মহামুনি নারদ শয়ন করিয়া চিন্তা করিতে লাগিলেন, “আহা ! ক্ষুধিতকে অন্নদানে, নিরাশ্রয়কে আশ্রয়দানে ও পরদুঃখ-বিমোচনে কি আনন্দ ! এরূপ নিৰ্ম্মল সুখ-সন্তোগে যাহার অভিলাষ নাই, তাহার মানব-দেহ-ধারণ, কেবল মাংসপিণ্ডের ভার-বহন ভিন্ন, আর কিছুই নয় ! সুরম্য হৰ্ম্ম্য-তলবাসী হলধর বাবু অতিথি সৎকারের জন্য, প্রতি বৎসর লক্ষমুদ্রা ও ব্যয় করিতে পারিতেন ; কিন্তু, তাহার সদ্ব্যয়ের প্রবৃত্তি একেবারেই ছিল না ; পক্ষান্তরে, কুটারবাসী ও শাকান্নভোজী ব্রাহ্মণ দম্পতী, আয়াস-লব্ধ আহাৰ্য্য দ্বারাও, আভুক্ত অতিথির ক্ষুন্নিবৃত্তি করিতে পারিলে কৃতাৰ্থ বোধ করেন। এ সংসারের নিয়ম অতি বিচিত্র । যাহার ইচ্ছা আছে, তাহার সামর্থ্য নাই ! 88
পাতা:দেবগণের অভিনব ভারত দর্শন.djvu/৫৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।