পাণ্ডুয়া ·GNH. দেবগণ এই সমস্ত দেখিয়া হাস্ত করিতে করিতে নগরের উত্তর দিকে একটা বৃহদাকার পুষ্করিণীর তীরে উপস্থিত হইয়া সবিস্ময়ে চাহিতে লাগিলেন এবং পিতামহ কহিলেন “বরুণ ! এ পুষ্করিণীটি কি ?” বরুণ। এই পুষ্করিণীটা প্রায় ১৩২ হাত বিস্তৃত। গোযুদ্ধের পূৰ্ব্বে পাণ্ডুয়ার হিন্দুদিগের মনে বিশ্বাস ছিল—যুদ্ধে কাহারও প্রাণত্যাগ হইলে ইহার পবিত্র জলে প্রাণদান করিতে পারে। অতএব এই পবিত্র সরোবরটা পাণ্ডুয়ায় থাকিতে কেহ নগর আক্রমণ করিয়া জয়লাভ করিতে পারিবেন। কিন্তু গোযুদ্ধে যে সমস্ত সৈন্ত হত হইয়াছিল, তাহারা প্রাণ পাইল না দেখিয়া কহিল “নিঃসন্দেহ মুসলমানেরা ইহার পবিত্র জলে গোমাংস নিক্ষেপ করিয়া অপবিত্র করিয়া দিয়াছে।” ব্ৰহ্মা । গোযুদ্ধ হয় কোথায় ? বরুণ। আজ্ঞে, ঠিক ষ্টেশনের সন্নিকস্থ ময়দানে। রেলওয়ে রাস্তা ও ষ্টেশন নিৰ্ম্মাণ সময়ে বিস্তর কবর ভগ্ন হওয়াতে অনেক মড়ার মাথার খুলি, হাড়, পাঁজর বাহির হইয়াছিল। দেবগণ আবার একদৃষ্টিতে পবিত্র পুষ্করিণীটার দিকে চাহিয়া দেখিতে লাগিলেন—উহার পাড় প্রকাও উচ্চ। কোন পাড়ে একটা ভাঙ্গা ঘাট পতিত থাকিয়া ইহার পূৰ্ব্বের সৌন্দর্য্যের সাক্ষ্য দিতেছে। কোন পাড়ে বহুকালের একটী সামান্ত গৃহ বৰ্ত্তমান রহিয়াছে। জলে অসংখ্য পদ্মফুল, লালফুলওমধ্যে মধ্যে পানীফলের গাছ সকল বিরাজ করিতেছে। জলের ধারে কৰ্দমের উপর দিয়া বকের নিঃশব্দে পদ নিক্ষেপ করিয়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মৎস্ত ও কীট পতঙ্গ যাহা সম্মুখে পাইতেছে ধরিয়া ধরিয়া খাইতেছে। তীরে প্রকাও প্রকাও অশ্বখ ও বট বৃক্ষের উপর মাচরাঙ্গা, শিকূরে ও অন্যান্ত পক্ষী সকল বসিয়া একদৃষ্টিতে জলের প্রতি চাহিতেছে এবং সময়ে সময়ে নক্ষত্ৰবেগে উড়িয়া আলিয়া জলে ডুব দিয়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মৎস্ত মুখে করিয়া লইয় গিয়া আহার করিতেছে। তীরে অসংখ্য গরু চরিতেছে। মুসলমান
পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন.djvu/৫২১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।