ত্রিবেণী ●ፃ » প্রবল ছিল যে, এক সময়ে বৰ্দ্ধমানের রাজ ত্রিলোকচন্দ্র বাহাদুরের নিকট নিমন্ত্রণে যাইলে রাজা জিজ্ঞাসা করেন,—“ভট্টাচাৰ্য্য ! পথে আসিতে কি কি দেখিয়া আসিলে ?” জগন্নাথ তদুত্তরে ত্রিবেণী হইতে বৰ্দ্ধমান পৰ্য্যন্ত রাস্তার উভয় পার্থের বৃক্ষ, লতা, জলাশয়, ঘর, দ্বার, দেবালয় প্রভৃতি এমন ' পৰ্য্যায়ক্রমে বলিয়াছিলেন যে, রাজা লিখিয়া লইয়া লোক দ্বারা পরীক্ষা করাইয়া অত্যন্ত আশ্চৰ্য্যান্বিত হন এবং তাহার মেধাশক্তির ভূয়সী প্রশংসা করিয়া পাণ্ডুয়া পরগণার অন্তর্গত হেদুয়া পোতা নামক একখানি গ্রাম ও অনেক ব্ৰহ্মত্র জমী এবং তিনশত বিঘা আন্দাজ একটী পুষ্করিণী দান করিয়াছিলেন। ইহার স্মরণশক্তির আরো একটা দৃষ্টান্ত আছে—এক সময়ে ইনি ঘাটে বসিয়া আহ্নিক করিতেছিলেন, এমন সময় ইংলণ্ড ও ফ্রান্সদেশীয় দুইজন সন্ত্রাস্ত ব্যক্তির নৌকা আসিয়া লাগিল। উহারা উভয়ে কথাস্তুর সুত্রে বিবাদ করিয়া মারামারি করেন এবং উভয়ে সুপ্রিমকোর্টে অভিযোগ করিয়া জগন্নাথকে সাক্ষী মানেন । জগন্নাথ বিচারালয়ে উপস্থিত হইয়া কহেন, “আমি উহাদের কথার অর্থ জানি না, তবে যে যাহা বলিয়া বিবাদ করিয়াছে—অবিকল বলিতে পারি” বলিয়া আদ্যোপাস্ত বিবৃত করিয়াছিলেন। ইনি রাজপ্রতিনিধি ওয়ারেণ হেষ্টিংসের আদেশে “বিবাদভঙ্গার্ণবসেতু" নামক একখানি বৃহদাকার হিন্দু ব্যবস্থা-গ্রন্থ প্রণয়ন করিয়া গবর্ণমেণ্ট হইতে মাসিক পঞ্চশত মুদ্রা বৃত্তি লাভ করেন । সার উইলিয়ম জোন্স ইহঁর নিকট সংস্কৃতভাষা শিক্ষা করিতেন। ইহঁার জীবদ্দশায় কলিকাতা ও হুগলি হইতে বড় বড় সাহেবের ইহঁার নিকট ত্রিবেণীতে পরামর্শ লইতে আসিতেন। ইনি একশত ত্রয়োদশ বৎসর জীবিত থাকিয়া প্রাণত্যাগ করেন। দেবগণ বাজারে আসিয়া দেখেন–পাণ্ডার হরিধ্বনি দিতেছে। কারণ বারইয়ারি তলায় যাত্রার দল উপস্থিত। চাহিয়া দেখেন—গোপ-কামান কাল কাল মিন্সেগুলো এবং মস্তকে স্ত্রীলোকের স্তায় চুলওয়ালা ছেলেগুলো দাড়াইয়া আছে। বরুণ কহিলেন, “উহারাই যাত্রার দলের লোক।”
পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন.djvu/৫৩৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।