ত্রিবেণী ৩৭৩ হইতে বৃন্দাবনচন্দ্রের কয়েক শত টাকা লইয়া গুপ্তিপাড়ায় প্রত্যাগমনকালে ডুমুরদহের দীঘির ধারে বসিয়া ফলার করিতেছিলেন, পশ্চাতে চাহিয়া দেখেন—দুই জন লাঠিয়াল দণ্ডায়মান রহিয়াছে। তাহারা কেন দণ্ডায়মান রহিয়াছে জিজ্ঞাসা করিলে বলে—“ডুমুরদহে কিসের ভয়, তাহ কি তুমি জান না ?” “জানি, দাড়া—এই কয়টা খেয়ে নিই” বলিয়া আশানন্দ আহার সমাপনান্তে দীঘির জলে মুখ হাত প্রক্ষালন করিয়া যেমন উপরে উঠিতেছিলেন, ডাকাইতের তাহাকে ঘন ঘন আঘাত করিতে লাগিল। তখন আশানন্দ তাহাদিগের প্রতি চাহিয়া ঈষৎ হাস্তপুৰ্ব্বক উভয়ের হস্ত হইতে যষ্টি কাড়িয়া লইলেন ও দুই জনকে দুই বগলে করিয়া গুপ্তিপাড়ায় উপস্থিত হইলেন এবং শ্বশুরকে কহিলেন, “কি দুটা জন্তু ধরিয়া আনিয়াছি—প্রদীপ আনিয়া দেখুন।” শ্বশুর প্রদীপ আনিয়া দেখেন—দুটা লোক অচৈতন্ত অবস্থায় আছে। তৎপরে আশানন্দ তাহাদের চোখে মুখে জলের ছিটা দিয়া চৈতন্য সম্পাদন করিয়া উত্তমরূপ আহার করিতে দিলেন। কিন্তু বিদায়কালে, পাছে তাহারা পুনরায় মনুষ্মহত্যা করে এই আশঙ্কায়, দুই জনের দুই খানি হস্ত ভাঙ্গিয়া দিয়াছিলেন। ব্ৰহ্মা। বরুণ! আশানন্দ কি বলবান পুরুষই ছিল ! আমার বোধ হয়, সে রীতিমত যুদ্ধবিদ্য শিক্ষা করিতে পারিলে কলির ভীম হইতে পারিত। ইন্দ্র। আর কি তেমন ঢেঁকী জন্মে ? বরুণ। এক্ষণে বিদ্যার ঢেঁকী বিস্তর পাওয়া যায়, বলের ঢেঁকী বিরল। হয়েছে কি জানেন, আর এখন কেহ কুস্তি কি ব্যায়ামশিক্ষা করে না। আর যদিও কেহ করে, তাহাঁদের তেমন খোরাক জোটে না । তদ্ভিন্ন পুর্বের দ্যায় নির্জল দুগ্ধ ও খাটি স্কৃত কাহারও পেটে পড়ে না ; সুতরাং টেকী জন্মিলেও সাধারণ্যে প্রকাশ পায় না। দেবগণ সন্ধ্যা আহিক সমাপ্ত করিয়া দোকানঘরে আসিয়া জলযোগ করিলেন এবং অনেক রাত্রি পর্য্যস্ত সকলে বসিয়া গল্প করিতে লাগিলেন।
পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন.djvu/৫৩৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।