૭૧8 দেবগণের মর্ত্যে আগমন তাহারা স্বৰ্গ হইতে কত টাকা আনিয়াছিলেন, এ পর্যন্ত কত খরচ হইয়া কত আছে এবং যাহা আছে, তাহাতে আর কত দিন চলিতে পারে, এ বিষয়ে মুখে মুখে একটা হিসাব করিলেন। ক্রমে বাজারে লোকে লোকারণ্য। বারোইয়ারি-তলায় যাত্রা বসিয়াছে। খুলীর “ঘাঁ বিচা” “ঘা ঘিচা” শব্দে খোল বাজাইতেছে। পিতামহ “উপ! ওঠ—যাত্রা শুন্তে যাই” বলিয়া উপকে তুলিলেন এবং সকলে আসরে গিয়া উপবেশন করিলেন। র্তাহারা গিয়া বসিবার অব্যবহিত পরেই সাজানো কৃষ্ণ আসিয়া দেখা দিলেন । র্তাহার ম্যালেরিয়া জ্বরে পেটে প্লীহা ও যকৃৎ হওয়ায় পেটুটা মোটা হইয়াছিল। গাত্রের বর্ণে প্রকৃতই কৃষ্ণ। পরিধানে ছেড়া নেকৃড়ার পীতধড়া । বক্ষে খড়ি-মাটির ধ্বজ-বজাঙ্কুশ-চিহ্ন। মস্তকে শোলার চুড়া। হস্তে বঁাশীর স্থলে একগাছি লাল ছড়ি । ছোড়াটা আসিয়া দেবগণের সম্মুখে ত্রিভঙ্গ হইয়া দাড়াইল । তাহার ভঙ্গী দেখিয়া দেবগণ হাত করিতে লাগিলেন ; নারায়ণ কিছু লজ্জিত হইলেন। এই সময় খুলীর আবার বাদ্য আরম্ভ করিল—“তাকৃ তাক তাকৃত ঘিনা”—”ঘিচাং ঘিনা তাকৃত ঘিনা”— অমনি কৃষ্ণ মুখে হাত দিয়া “আয় আবু আবু ধবলি ! মা ননী দে।” শব্দ করিয়৷ তালে তালে পা ফেলিয়৷ নৃত্য আরম্ভ করিল। পিতামহ নৃত্য দেখিয়া হেসে লুটে পড়িলেন। দেবগণ নারায়ণের কানে কানে কহিলেন “ভাই, পেটের জাল ধ’লে তুমি কি ঐ বেশে ঐরুপ নৃত্য করে ননী চাহিতে ?” নারা । বাঃ ! তা চাব কেন ? বাঙ্গালীদের বড় অন্যায়! আমাকে তাহারা দেবতা বলে পূজা ক’তেও ছাড়ে না, আবার স্থলবিশেষে সং সাজিয়ে বানর-নাচও নাচিয়ে থাকে। এই সময়ে আটচালার বাহিরে একপাল ছেলে গান ধরিল । ক্রমে জলট গান করিতে করিতে আসরে আসিয়া দেখা দিল । তৎপশ্চাৎ
পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন.djvu/৫৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।