পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন.djvu/৬৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Se. দেবগণের মর্ত্যে আগমন গাড়ী ঘোড়া রহিয়াছে। যাত্ৰিগণ আর দর দস্তুর করিতেছে না, সকলেই এক এক খানি গাড়ী মনোনীত করিয়া উঠিবামাত্র কোচম্যানের এক এক দিকে লইয়া যাইতেছে। বরুণ কহিলেন, “এখানে গাড়ীর দর ঠিক থাকার কেমন সুবিধা হইয়াছে দেখ। ঠাকুরদা ! হাবড়া দেখবেন ?” ব্ৰহ্মা । না ভাই, হাবড়া দেখা এক্ষণে থাকৃ, অগ্রে আমাকে গঙ্গার সহিত দেখা করিয়ে দেও। দেখ বরুণ ! এখানে আসিয়া আমার মনে যেন এক আশ্চৰ্য্য ভাবের উদয় হইতেছে ; চতুর্দিকে যত চাহিয়া দেখিতেছি .—আমার বোধ হইতেছে, এ যেন আমার স্বষ্টি নহে ; আর কাহারও নুতন স্বষ্টি।” পিতামহ সজল নেত্রে দেবগণ সহ গঙ্গার জলের দিকে চাহিয়া দেখেন—জল দেখিবার যো নাই—জাহাজ, ষ্টীমার, পান্সী, ভাউলে, ষ্টীমবোট প্রভৃতিতে জল ঢাকিয়া রাখিয়াছে। কোন ষ্টীমারে ভো ভো শব্দে শঙ্খের শব্দের দ্যায় ভয়ানক শব্দ হইতেছে । ছোট ছোট ষ্টীমবোটগুলি পে পে। শব্দে তীরবেগে বহিয়া যাইতেছে। বড়-বড় জাহাজের মাস্কলের উপর ইংরাজ নাবিকেরা বসিয়া আছে। তৎপরে তাহারা স্নানের খাটগুলির দিকে চাহিয়া দেখেন—পিপড়ের সারের দ্যায় অসংখ্য লোক স্নান করিতেছে। ইহার পর তাহার কলিকাতার এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পৰ্য্যস্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া দেখেন—কেবল সৌধশ্রেণী—যেন অট্টালিকাশ্রেণীর মালা গাথিয়৷ কলিকাতাকে সাজাইয়া রাথিয়াছে এবং মধ্যে মধ্যে প্রকাও প্রকাও চিমনী দিয়া ধুম উঠিতেছে। এখান হইতে যাইয়া সকলে ভাগীরথীতীরে উপস্থিত হইলেন পিতামহ জলের নিকট যাইয়া ”গঙ্গা” “গঙ্গা” শব্দে কঁাদিতে লাগিলেন। বরুণ । এস—আমরা সকলে পিতামহকে প্রদক্ষিণ করিয়া থাকি ; নচেৎ এ বড় কদৰ্য্য দেশ, দেখতে পেলে লোকে পিতামহকে ঠাট্টা করবে, পাগল বলে গাত্রে ধুলা ও জলের ছিটা দিবে। এই সময় পিতামহ নয়ন মুদ্রিত করিয়া গঙ্গার স্তব আরম্ভ করিলেন।