Q>や দেবগণের মর্ত্যে আগমন তেল লুণ নাই ; কয়লা-অভাবে রন্ধন হইতেছে না। অতএব বিশ্রাম করা দূরে থাকৃ—ধূলি পায়ে টাকা কর্জ করিতে বাহির হইবেন। কেরাণীদিগের টাকা যেমন আসে, তেমি যায় ; কারণ, ইছারা সমস্ত মাসে দোকানে উঠনা থাইয় থাকেন । তদ্ভিন্ন যে পয়স। উপার্জন করেন, তাহাতে অনেকের তেঁতুল-মাখা ভাত জুটে না; তাহার উপর লৌকিকতা ও আচার-ব্যবহার সকলই আছে। ইহারা আবশুক হইলে চারি পয়সা স্বদেও টাকা কঞ্জ করেন ; শেষে পরিশোধের সময় দেখেন, এক টাকায় স্বদে আসলে তিন টাক হইয়া আছে। কেরাণীদিগের এমি কপাল! পরিবার সদা সৰ্ব্বদা কহিয়া থাকেন, “লোকে স্ত্রীকে কত সোণা দানা দিচ্চে, কাশী গয়া করিয়ে আন্চে। তোমার হাতে পড়িয়া ত সে সব মুখ হ’লে না, হবেও না ; এক্ষণে মাসকাবারে ছয় ভরির বালা দেবে কি না বল ?” বাবু কহেন, “তোমাকে কি আমার দিতে অসাধ ? ভাগ্যে জুটে না—কেমন ক’রে দিই বল ?” স্ত্রী কহেন, “তা আমি জানি না, দেবে কি না বল ? নচেৎ খুনোখুনি হয়ে মন্থবো।” বাবু কহেন, “ভাল, তা মাস কাবার হ’লে মাইনের টাকাগুলি এনে তোমার হাতে দেব, তুমি সংসার চালিয়ে পার, ক’রে নিও ।” স্ত্রী কহেন, “তা নেব কেন ? তোমাকে যেখান থেকে হউক এনে দিতে হবে । যার খাবার সংস্থান নাই, সে বে করে কেন ?" এইরূপ বিবাদ করিতে করিতে রজনী প্রভাত ; তখন বাবুব স্ত্রী শয্যা হইতে উঠিয়া “আর পারি না—রাদুনীকে রান্ধনী—বাদীকে বাদী, কেবল থেটে খেটে মর, একখানা গয়না কি ভাল কাপড় দেবার ক্ষমতা নাই—মরণ হ’লে বঁচি ৷” বলিয়৷ রন্ধন চাপাইতে যাইলেন । বাবু শয্যা ত্যাগ করিয়া এক ছিলিম তামাক টানিয়া ছেড়া কাপড় সেলাই করিতে বসিলেন । আন্দাজে বেলা ঠিক করিয়া স্নান করিতে বাহির হইয়া দেখেন, বেলা হয়েছে—দুই একজন কেরাণী আফিসে যাইতেছে । আমি ছুটে এসে ব্ৰহ্মতালু কলের জলে ভিজেয়ে নিয়ে কাপড়খান ছেড়ে ফেলে ব’ল্লেন, “গিন্নি, ভাত দাও—
পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন.djvu/৭১০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।