কলিকাতা අNA ব্যবসায়ে ধিক্কার দিয়া পুত্রকে পনের টাকার কেরাণী প্রস্তুত করিতেছেন । যে কবিরাজ ধন্বন্তরি নামে পরিচিত হইয়া অর্জিত ধন বহন করিয়া আনিতে পারিতেন না, তিনিও নিজ ব্যবসায় পরিত্যাগ করিয়া পুত্রকে ইংরাজী শিখাইয়া কেরাণী প্রস্তুত করিতেছেন। যে কুম্ভকার উত্তম উত্তম ছবি ও পট আঁকিয়া স্বাধীনভাবে ৪০৷৫০ টাকা উপার্জন করে, সেও কাদী ছানা অতি জঘন্ত ব্যবসায় বলিয়া নিজ পুত্রকে ইংরাজী শিখাইয়। কেরাণী তৈয়ার করিতেছে। এইরূপে ধোপা, নাপিত, মেথর, মুদফরাস সকলেই কেরাণী হইবার জন্য হাত ধুইয়া বসিয়া আছে। ব্ৰহ্মা । দেশ উৎসন্ন যাবে। ইহার পর লোকের নাপিতের অভাবে সৰ্ব্বাঙ্গে চুল, ধোপার অভাবে মলিন বস্ত্র এবং মুদফরাসের অভাবে মরে ঘরে পচিতে হবে। . এখান হইতে যাইতে যাইতে এক স্থানে উপস্থিত হইয়া নারায়ণ কহিলেন, “বরুণ ! ঐ যে দেখা যাইতেছে, উহার নাম কি ?” বরুণ। ইহার নাম ওরিয়েন্টেল ব্যাঙ্ক। বাঙ্গালীদেব যাবতীয় বেনেতি রোকড়ের কার্য্য এই স্থানে হইয় থাকে—অর্থাৎ লোকে এখানে টাকা জমা রাখিয়া থাকে । অনেকে কোম্পানীর কাগজপত্র বন্ধক দিয়াও এখান হইতে টাকা লয়। এই ব্যাঙ্কের মূল ধন এক্ষণে বেশী হওয়াতে অন্তান্ত ব্যাঙ্ক অপেক্ষ ইহার কম সুদে টাকা রাখিয়া থাকে এবং যে মেয়াদে টাকা রাখা যায়, সেই সময়ে সুদ ও নির্দিষ্ট দিবসে টাকা ফেরত দিয়া থাকে। এখানে ‘যখন ইচ্ছা টাকা লইব’ এরূপ সৰ্ত্তে টাকা রাখিলে সুদ পাওয়া যায় না । - এই ব্যাঙ্কের উপর গচ্ছিত টাকা বাড়াইয়া দিবার ভার দিলে ইহারা সস্তার বাজারে কোম্পানীর কাগজ কিংবা ব্যাঙ্কবিল অথবা কোন কোম্পানীর অংশ খরিদ ও বিক্রয় করিয়া দিয়া থাকে। এখানেও প্রতারণা চলে । ব্ৰহ্মা । ওরে ভাই ! প্রতারণার কাল পড়েছে, তা প্রতারণা চ’লবে না ?
পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন.djvu/৭৫৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।