С le দেবগণের মর্ত্যে আগমন দেবগণ কত ডাকিলেন, কিন্তু উপ কিছুতেই বাসায় আসিল না, অগত্যা তাহারা বাসাভিমুখে চলিলেন। যাইতে যাইতে দেবগণ দেখেন— এক স্থানে বলিয়া কতকগুলি লোক গল্প করিতেছে । একজন কহিতেছে “ইংরাজের রাজ্য করা—প্রজার অন্নমার। দেখ, আমি জাতিতে ভিস্তি, পূৰ্ব্বে আমরা ৩৬ জনে এক একটা রাস্তায় জল দিতাম ; এক্ষণে সেই কাজ দুজনকে দিয়ে করাচ্চে, কি এক একটা কল করে দিয়েছে ; দুজন লোকে ফর ফর শব্দ ক’রে পাচ মিনিটে এক একটা রাস্তাকে কাদা ক’রে দিচ্ছে । ঐ কল হয়ে পৰ্য্যন্ত আমি বেকার বসে আছি।” অপর কহিল “আমার দুঃখও কম নয়, আমি জাতিতে মেথর, পূৰ্ব্বে মাথা গণে চারি পয়সা নিয়ে প্রত্যেক বাড়ীর ময়লা সাফ করতাম, ইহাতে ৩০|৩১ টাকা উপার্জন হইত ; এক্ষণে ইংরাজের প্রত্যেক বাড়ীর চারি পাচ আনা টেক্স ক’রেছেন ও আমাদের ৫।৬ টাকা মাইনে ক’রে রেখেছেন।” অপর কতকগুলো লোক কহিল “আমাদের দফা ইংরাজের একবারে সেরেছে। আমরা উৎকল হইতে আসিয়া কলিকাতায় জলের ভারীর কাজ করতাম । আমাদের গুমর কত ছিল, কেহ ডাকূলে কথা কইতাম না ; চারি পয়সা ছয় পয়সা নিয়ে তবে গঙ্গা থেকে জল এনে দিতাম। এখন এমনি কল ক’রে দিয়েছে, দোতলায় ব’সে কল নেড়ে জল পাচ্চে ।” নিকটে একজন কোচম্যান গাড়ীর উপর বসিয়া খরিদদারের প্রত্যাশা করিতেছিল, সে কহিল “আমার কষ্ট দেথ না, পূৰ্ব্বে এমন ক’রে কি বসে থাকৃতাম ? এখন অন্ন মেলা ভার হয়েছে। লক্ষ লক্ষ লোক ট্রাম গাড়ীতে বয়ে নিয়ে যাচ্চে। আর আমাদের রাস্তার মধ্যে দেখলে ঘণ্টার শব্দে তাড়া দিয়ে স’রে যেতে বলে ।” অপর কহিল “আমরা তাতি, আগে তাত বুনে বেশ দশ টাকা পেতাম, কাপড়ের কল হয়ে পৰ্য্যস্ত আমাদের দফা রফা ই হ’য়েছে।” নিকটে একজন দাড়াইয়াছিল ; সে কহিল “আমি পারের মাঝি। ইংরাজেরা ষ্টিমার ও রেলগাড়ী
পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন.djvu/৭৭২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।