পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন.djvu/৮২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$ . রাগিয়াছে, পরিবার পরিজন সকলেই নিদ্রিত, তখনও বিদ্যাভূষণ মহাশয় অধ্যয়ন করিতেছেন। আবার প্রাতে ৪টা হইতেই তাহার ঘরে প্রদীপ জ্বলিতেছে ; তিনি উঠিয়া লিখিতেছেন। তিনি যত সুস্থ ও সবল ছিলেন, চারি ঘণ্টার অধিক কাল কখনই নিদ্রা যান নাই। অতি প্রত্যুরে উঠিয়া পরিবারস্থ সকলকেই জাগাইতেন। প্রথমে পুত্ৰকস্তাদিগকে তুলিতেন, তৎপরে ভ্রাতা ও ভগিনীদিগকে প্রত্যেকের নাম ধরিয়া ডাকিয়া জাগাইতেন। সকলকে না তুলিয়া নীচে নামিয়া আসিতেন না। আলস্ত তিনি দেখিতে পারিতেন না—অলস ও অকৰ্ম্মণ্য লোককে যেরূপ ঘৃণা করিতেন. চোর ডাকাতকে তত ঘৃণা করিতেন না। সৰ্ব্বদাই বলিতেন—“উদ্যোগিনং পুরুষসিংহমুপৈতি লক্ষ্মীঃ—উদ্যোগশীল পুরুষসিংহকেই লক্ষ্মী আলিঙ্গন করিয়া থাকেন। যাহার উদ্যোগ নাই, সে । সংসারে লক্ষ্মীছাড়া হয় ।” এই সকল গুণে বিদ্যাভূষণ মহাশয় সাধারণের শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন। কিন্তু তাহার সর্বপ্রধান কীৰ্ত্তি—সোমপ্রকাশ। 'এই সংবাদপত্র প্রকাশ করিয়৷ তিনি এদেশে সংবাদপত্রের পুনর্জন্ম দিয়াছিলেন। র্তাহার পূৰ্ব্বে যে তুই একখানি বাঙ্গাল খবরের কাগজ ছিল, তাহাতে কেবল কবিতা ও ছড়া ও লোকের গালাগালি প্রকাশ হইত। তিনি প্রথমে এ দেশের লোককে গম্ভীরভাবে রাজনীতির আলোচনা করিতে শিখাইলেন । ১০২৬ বৎসর পূৰ্ব্বে তিনি যখন পরিশ্রমে সমর্থ ছিলেন, তখন সোমপ্রকাশ সৰ্ব্বগ্রগণ্য কাগজ ছিল। গবর্ণমেণ্ট ইহার মতামত মনোযোগ পূর্বক শুনিতেন, লোকেও ইহঁার মত কি, জানিবার জন্ত উৎসুক থাকিত। পরিশেষে বিদ্যাভূষণ মহাশয়ের বাৰ্দ্ধক্য ও শরীরের অমুস্থত নিবন্ধন সোমপ্রকাশের আর সে দশা ছিল না । ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও অক্ষয়কুমার দত্ত যেমন বাঙ্গালী ভাষার জন্মদাতা, বিদ্যাভূষণ মহাশয় সেইরূপ বাঙ্গাল সংবাদপত্রের, জন্মদাতা। এজন্ত এ দেশের লোক চিরদিন ইহার নিকট ঋণী থাকিবেন । J -