দেবগণের মর্ত্যে আগমন সময় তাহার সেই উপস্থিত জান হওয়ায় ইহার নাম জ্ঞানবাপী হইয়াছে। আহা ! যতক্ষণ মন্দির ভগ্ন করে, তিনি এই অন্ধকার বাপী হইতে সজলনয়নে যে ভাবে উকি মারিয়া দেখিয়াছিলেন, আস্তাপি আমার মনে হলে কান্না আসে । ব্ৰহ্মা। বরুণ ! চুপ কর ভাই। ভক্ত বঙ্গবাসীরা এ কথা শুনলে হেসে থলবে-আমরাও যেমন পালোয়ান, আমাদের দেবতারাও ততোধিক। ফলতঃ তুমি বাপীর উৎপত্তি যাহা কহিলে—তাহা নহে। বরুণ। তবে কি ? ব্ৰহ্মা। এক সময়ে দেবগণ ও গণপতি কাশীতে আসিয়া দেখিলেন, বিশ্বেশ্বরকে স্বান করাইবার জন্য কোন জলাশয় নাই। গজানন তদৃষ্টি অত্যন্ত দুঃখিত হইয়া নিজ ত্রিশূল দ্বারা এক কূপ খনন করিয়া সেই জলে শিবকে স্নান করান। মহাদেব ইহাতে সন্তুষ্ট হইয়া বর দিতে চাহিলে গজানন এই বর লন যে, এই কুণ্ড যেন অদ্য হইতে সৰ্ব্বতীর্থপেক্ষ শ্রেষ্ঠ হয়। শিব “তথাস্তু" বলিয়া কূপের নাম “জ্ঞানবাপী” রাখিলেন এবং বলিলেন, “এই বাণীর সেবা করিলে লোকে দিব্যজ্ঞান প্রাপ্ত হইয়া স্বৰ্গারোহণ করিবে।” নারায়ণ । বরুণ | জ্ঞানবাপী হইতে যে দুৰ্গন্ধ বাহির হইতেছে- মেজদা আমার কেমন করে লুকিয়েছিলেন তাই ভাবছি, চল ভাই, এখান হইতে পালাই, নচেৎ আমার বমি হবে । ব্ৰহ্মা। কৃষ্ণ ! তুই হলি কি ? ও কথা কি বলতে আছে ? আহা ! এমন তীর্থ জগতে নাই । এখান হইতে দেবতারা অন্নপূর্ণার মন্দিরে যাইয়া উপস্থিত হইলেন এবং শ্বেত ও কৃষ্ণবর্ণ প্রস্তর নিৰ্ম্মিত মেজে ও পিত্তলাচ্ছাদিত ঘরের প্রতি আশ্চৰ্য্য হইয়া চাহিতে লাগিলেন । দেখেন-নাটমন্দিরের স্তম্ভগুলি অতিশয় স্থচিত্রিত । দালানে বসিয়া অসংখ্য উৰ্দ্ধবাহু,একবাহুপরমহংস স্বমধুরম্বরে বেদপাঠ করিতেছেন। গৃহমধ্যে দ্বিভূজা অন্নপূর্ণ বসিয়া আছেন। দেবীর সর্বাঙ্গ বস্ত্রাচ্ছাদিত, কেবল স্ববর্ণময় মুখখানি খোলা। তাহার এক হাতে হাতী—অপর হাতে থালা। প্রতিমূৰ্ত্তি প্রস্তরনির্মিত। গৃহমধ্যে অন্ধকার নিবন্ধন হউক বা যে কারণেই হউক দিবারাত্রি একটি ঘৃত-প্রদীপ জলিতেছে । দ্বারদেশে একটি পরদা ঝুলান। ইন্দ্র। আমি দেখে বড় সন্তুষ্ট হইলাম যে, অন্নপূর্ণাকে আবরুতে রাখিয়াছে । ১১২
পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/১০৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।