পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সামাজিক ইতিহাস লেখার রেওয়াজ বাংলা ভাষায় শুরু হয়েছে হতোম প্যাচার নকশা রচনার পর থেকেই। এসময় আমাদের দেশের ধনী সমাজপতির। টাকা দিয়ে ভাড়াটে লেখক জোগাড় করে ছাপান পরচর্চা’র যুগ শুরু করেন। বহু ধনী এই সুযোগে পারস্পরিক 'চাপানউতোর’ পালা শুরু করেন। হু তোম প্যাচার নকশার পর, বলা বাহুল্য, তাই নকশা-উতোর সাহিত্য পর্বটাই শুরু হয় । কোনো ধনী যদি ভাড়াটে লেখক দিয়ে মনোমত ব্যঙ্গাত্মক (Satirical Sketch) সমালোচনা করলেন কোনো শক্র সমাজপতির সঙ্গে সঙ্গে তিনিও তৎক্ষণাং টাকা দিয়ে তার উতোর লেখালেন কোন লেখকের মাধ্যমে। এই পরচচ কুৎসার মধ্যে রঙ্গ ব্যঙ্গের আস্বাদ পেতেন পাঠকরা ।

  • ওই থানে আপনাকে বলিয়া রাথি যে ‘হুতোম প্যাচার নকসা রচনার পর হইতে নাটক বা উপন্যাস সাহিত্যে কে কার জবাব দিল ইহাই সকলে জানিতে চেষ্টা করিত * *১

ধনী সমাজপতিদের এই কুৎসিত পরচর্চাকে সেকালের পাঠকসমাজ কিভাবে রক্ষ বা ব্যঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন তা আজি বিশ্লেষণের বিষয় । তবে বঙ্কিমচন্দ্র বলেছেন, ‘ইউরোপীয় যুদ্ধ ও ইউরোপীয় রসিকতা এক মা'-র পেটে জন্মিয়াছে—দুয়ের কাজ মানুষকে দুঃখ দেওয়া । ইউরোপীয় অনেক কুসামগ্রী এই দেশে প্রবেশ করিতেছে।৬২ এইভাবে ধনী সমাজপতিদের অন্দরমহলের গুপ্ত কথাও চাপা হতে থাকলো । লগুন শহরের গুপ্তজীবন বিলাতী গুপ্ত কথার নকল এদেশেও হতে থাকল বঙ্কিমচন্দ্রের উদ্ধৃতি মত । এই সামাজিক বর্ণনারই পরিশীলিত রূপায়ণ দেবগণের মর্ত্যে আগমণ ।” কুংসিত পরচর্চা ইত্যাদির বদলে সারা ভারত জুড়ে tourist guide-এর বদলে মিষ্টি কলমে ভারতের বর্ণনা করেছেন দুর্গাচরণ। তারই মাঝে মাঝে মৃদ্ধ মৃদু ব্যঙ্গের ছোয়াচও যথারীতি রয়েছে । কিন্তু উগ্র তীক্ষ্ণ পরচর্চা বা বিদ্বেষের স্পর্শ কমিয়ে মোটামুটি ভ্রমণের ধর্ম অনুসরণ করে। দুর্গাচরণের জন্ম বর্ধমান জেলার দীর্ঘপাড়া গ্রামে ; বৈদ্যবংশে। তার জন্ম

  • ১ পুরাতন প্রসঙ্গ—অমৃতলাল বস্থ পৃ-২১৭ *২ বাংলা সাহিত্য—মনোমোহন ঘোষ পৃ-২৯৭

$ ls