পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবগণের মর্ত্যে আগমন কহিলেন, “নারায়ণ ! কলিকাতায় পছছে আমাকে পত্র লিখে৷ ” এই সময় ট্রেণ প্লাটফরক পার হইয়া “লটাপট” “ঝটপট” “লটাপট” “বটাপট” শব্দে দৌড়াইল । ক্রমে ট্রেণ মিরজাপুর প্রভৃতি অতিক্রম করিয়া ধুম উদগার করিতে করিতে বন ঝন ঝনাং, ঝন ঝন ঝনাং শব্দ করিতে লাগিল। বরুণ চীৎকার করিয়া বলিলেন, “পিতামহ উঠে দেখুন, যমুনাব্রিজের উপর গাড়ী এসেছে।” দেবতারা ব্যগ্রতার সহিত দ্বারের নিকট আসিয়া একদৃষ্টে পোল দেখিতে লাগিলেন। ট্ৰেণ মন্দগতিতে ব্রিজ অতিক্রম করিয়া পুনরায় হুপান্থপ, শব্দে ছুটিতে লাগিল। দেবগণ আপন আপন স্থানে শয়ন করিয়া ইংরাজ জাতির ভূয়সী প্রশংসা করিতে লাগিলেন। দুটি ষ্টেশন অতিক্ৰম করিয়া ট্রেণ আবার পূর্বের ন্যায় “ঝন ঝন ঝনাং” “ঝন ছন ঝনাৎ" শব্দ করিতে লাগিল। এই সময় যাত্রিগণ একবার সজোরে হরিধ্বনি করিয়া উঠিল। বরুণ বলিলেন, “ঠাকুরদা ! উঠে এসে দেখুন, সেটা যমুনা ব্রিজ নয় এইটে,—আমার তখন ভ্রম হয়েছিল।” দেবগণ সবিস্ময়ে একদৃষ্টি চাহিতে লাগিলেন এবং মনে মনে ভাবিলেন, “পৃথিবীতে ইহাদের দ্বারা অসম্ভব কিছুই নাই। বাস্তবিক ইহারা একদিন স্বর্গের সিড়ি প্রস্তুত করিবে ।” নারায়ণ। পূৰ্ব্বের সে পোলটা কি ? সেটাও ত প্রায় এমি বৃহৎ। বরুণ। সেটা টোন ব্রিজ । সেটাও যমুনা ব্রিজের মত বৃহৎ বলিয়া অনেক সময়ে লোকের আমার ন্যায় ভ্রম হইয়া থাকে । এই সময়ে ট্রেণ ধীরে ধীরে ষ্টেশনের মধ্যে প্রবেশ করিল। যান্ত্রিগণ মনের হরিষে উচ্চরবে ঘনঘন হরিধ্বনি করিতে লাগিল । নারা। বরুণ ! এত ষ্টেশন পার হয়ে এলাম-কোথাও ত এমন হরিধ্বনি শুনি নাই। এলাহাবাদে এত হরিনামের ধুম কেন ? বরুণ। প্রয়াগের মাঘ-মেলা উপস্থিত, এজন্য যে সমস্ত যাত্রী তীর্থ দর্শন অভিপ্রায়ে আসিয়াছে, তাহারা অভিলষিত স্থানে ট্রেণ উপস্থিত হইয়াছে দেখিয়া মনের আনন্দে উচ্চৈঃস্বরে হরিধ্বনি করিতেছে। এই কথা শ্রবণে দেবগণেরও মনে আনন্দের উদয় হইল ; তাহারা যাত্ৰিগণের সঙ্গে উচ্চৈঃস্বরে হরি হরি বল” “হরি হরি বল” শব্দ করিয়া ধীরে ধীরে গাড়ী হইতে অবতীর্ণ হইলেন। 338