পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এলাহাবাদ ষ্টেশনের বাহিরে আসিয়া দেবতারা একখানি ঘোড়ার গাড়ী ভাড়া করিয়াগঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী নদীত্রয়ের সঙ্গমস্থল অভিমুখে চলিলেন । যাইতে যাইতে ইন্দ্র কহিলেন, "বরুণ ! অন্যান্য স্থান অপেক্ষ এলাহাবাদে ঘর বাড়ী এত কম কেন ?” বরুণ। এলাহাবাদে বাড়ী ঘরের সংখ্যা কম, এজন্য ইহার আর একটি নাম ফকিরাবাদ । এখানকার পল্পীসকল পরস্পর এত দূরে অবস্থিত যে, এক একটিকে এক একটি ভিন্ন ভিন্ন গ্রাম বলিয়া বোধ হয় । ষ্টেশন হইতে বেণীতীর আড়াই ক্রোশ পথ । ঘোড়ার গাড়ীতে এই সামান্ত পথ অতিক্রম করিতেও দেবগণের অভ্যস্ত কষ্টবোধ হইতে লাগিল । ভাগ্যক্রমে গাড়োয়ান সে দিন একটা নূতন ঘোড়া জুতিয়াছিল। অনভ্যাসবশতঃ ঘাইবার সময় কখন সেটা শুইয়া পড়িবার—কখনবা দক্ষিণপশ্চিম দিকের নর্দমায় গাড়ীসহ দেবগণকে উন্টাইয়া ফেলিবার বিধিমত প্রকারে চেষ্টা পায় । কেবল গাড়ীর পশ্চাৎভাগের ঘেমুড়ে তাহদের বিপদের কাণ্ডারী হইয়া উদ্ধার করে। সে বেগতিক দেখিলেই ছুটিয়া গিয়া ঘোড়াটাকে উত্তমরূপ প্রহার পূর্বক শিক্ষা দেয় যে—হাজার নষ্টামি কর, এ ভারবহনক্লেশ হতে তোমার নিস্তার নাই । বিধাতা তোমার অদৃষ্ট ছাকড়াগাড়ী বহন লিথিয়াছেন। অতএব যত দিন জীবিত থাক, একটু একটু দানা জল খেয়ে এই কাজে প্রবৃত্ত হও । কেন আর অনর্থক প্রহার-যন্ত্রণ সহ কর । শমন না লওয়া পৰ্য্যন্ত তোমাদের নিস্তার নাই । ক্রমে ক্রমে দেবগণের গাড়ী বেশীতীরের বিবিধ সামগ্রীপূর্ণ চকের মধ্যে প্রবেশ করিল। দেবগণ দেখেন, নাপিতেরা ভাড়-বগলে দুটাছুটি আরম্ভ করিয়াছে। ব্ৰহ্মা জিজ্ঞাসা কৱিলেন, “বরুণ ! ওরা কারা? আর এত আনন্দিতই বা কি জঙ্ক ?” বরুণ । উহার প্রয়াগের পরামাণিক। মাঘ মাসে উহাদের পোয়াবারো, কারণ যাত্রীদিগের মাথায় ক্ষুর বুলাইয়া বিলক্ষণ দশ টাকা উপার্জন করিবে । এ বৎসর যাত্রিসংখ্যা বেশী দেখিয়াই উহাদের আনন্দের পরিসীমা নাই । বেণীঘাটের সন্নিকটে গাড়ী উপস্থিত হইবামাত্র এলাহাবাদের প্রসিদ্ধ কেল্লা দেবগণের নয়নপথে পতিত হইল। দেবরাজ কহিলেন “বরুণ ! দেখা যাচ্চে— ওটা কি ?” - \et