পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এলাহাবাঙ্ক রাজা বাম্বকিয় ঘাট বড় উৎকৃষ্ট ; নগরের মধ্যে এই ঘাটটি প্রধান বলিলেণ্ড, অত্যুক্তি হয় না। এখান হইতে সকলে শিবকোটি দেখেন। কথিত আছে । রামচন্দ্র বন গমন সময়ে এই শিব প্রতিষ্ঠা করিয়া পূজা করিয়াছিলেন। ইহাকে পূজা করিলে কোটি শিবপূজার ফল প্রাপ্ত হাওয়া যায় বলিরা শিবকোটি নাম হইয়াছে। অবশেষে দেবগণ যমুনার উপরিস্থ লৌহনিৰ্ম্মিত সুদীর্ঘ সেতু দেখিবার জন্য উপস্থিত হইলেন। যখন তাহারা পোলের নীচে দাড়াইয়া সেতুর গুণাগুণ বর্ণন করিতেছেলেন, তখন উপর দিয়া “সঁ্যাৎ স্যাৎ ছপা ৰূপ” “স্যাৎ স্যাৎ ৰূপান্থপ” শব্দে একখানি ট্রেণ চলিয়া গেল, দেবতারা একদৃষ্টে চাহিয়। রহিলেন। বরুণ। দেখুন পিতামহ, এই লৌহনির্মিত সেতু তিন ভাগে বিভক্ত। উপর দিয়া বাষ্পীয় শকট যাতায়াত করিতেছে। উহার নিম্নে মনুষ্যগণের যাতায়াতের পথ। তাহার নিম্ন দিয়া জলযান সকল গভায়াত করিয়া থাকে । নারা । যমুনা যে আগ্রায় পিতামহের নিকট কাদিয়াছিল, তাহার এক্ষণে প্রকৃতই কাদিবার দিন । কারণ, সে তিন স্থানে বন্ধন-দশা প্রাপ্ত হইয়াছে। প্রথমতঃ দিল্লীতে ; দ্বিতীয়তঃ আগ্রায়, এবং সৰ্ব্বশেষে প্রয়াগে। যমুনা বহুকাল আদরের সহিত ভারতে বিচরণ করিয়াছে। ভারতের ইতিহাস যমুনার যেমন জানা আছে, এমন আর কাহারও নাই। যমুনা অনেক যুদ্ধ স্বচক্ষে দেখিয়াছে এবং যুদ্ধের শবও বহন করিয়াছে—এমন কি, এক সময়ে সে বীরপুরুষদিগের রক্ত নিজ গাত্রে মাখিয়া রক্তবর্ণ ধারণ করিয়াছিল। আজ দেখুন, সেই যমুনা ভারতবামীদিগের সহিত কি দুরবস্থাই প্রাপ্ত হইয়াছে! এক সময়ে এই যমুনা-জলে ভারত-রমণীগণ নিৰ্ভয়ে অবগাহন করিত। এক সময়ে এই যমুনা পুলিনে ভারতরমণীগণের চরণলুপুরের সুমধুর শব হইত, আজ সেই যমুনা শুষ্কপ্রায় হইয়া মন্দগতিতে বহিতেছে । আজ রেলের চাকায় সেই যমুনার শরীর ক্ষতবিক্ষত হইতেছে! পিতামহ! এই যমুনাতীরে আমার মথুরাপুরী ; আমি যখন . বালস্বভাব প্রমুক্ত এইখানে কদমগাছে বসিয়া বঁাশীর গান করিতাম, সেই সময়ে পাগলিনী যমুনা উজান বহিয়া শুনিতে আসিত। আজ সেই যমুনার দুঃখ দেখে । আমার দুঃখ ধরে না! ঠাকুরদাদা ! যমুনা চিরকাল রাজভোগে থাকিয়া আজ দাসী। যমুনা চিরকাল স্বাধীন থাকিয়া আজ পরাধীন । এ অপেক্ষ আর দুঃখের বিস্বস্তু কি আছে ? ›ፀዬ