পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবগণের মর্ত্যে আগমন মুহূৰ্ত্তও থাকতে নাই। আমি এই দণ্ডে গয়া পরিত্যাগ করিলাম, তোমাদের ইচ্ছা হয় থাক । দেবগণ র্তাহার কথায় সম্মত হইয়া তল্পতল্পা উঠাইয়া লইলেন। এবং কতকগুলা পাথরবাটি খরিদ করিয়া ষ্টেশনে চলিলেন। যাইতে যাইতে ব্ৰহ্মা কহিলেন, “বরুণ! গয়ার সংক্ষিপ্ত বিবরণ বল।” বরুণ। গয়া একটি বহুকালের তীর্থস্থান। এখানে প্রায় দুই হাজার বৎসরের মন্দির আছে। গয়ার তুল্য তীর্থ ভারতে আর দ্বিতীয় নাই। এখানে সমস্ত ভারতের যাত্ৰিগণ পিতৃগণের উদ্দেশে পিণ্ডদান করতে আসিয়া থাকে। নগরের মধ্যে প্রকাও প্রকাগু অনেকগুলি আডড আছে । সেইখানে আদিয়া তাহারা বাসা লয়। গয়ালীরাই গয়ার সর্বময় কর্তা । ইহারা নিতান্ত নিৰ্ব্বোধ, বিষ্ঠাশিক্ষা ইহাদের কুষ্ঠিতে লেখা নাই ; কিন্তু বিনা পরিশ্রমে যাত্রীদিগকে উৎপীড়ন করিয়া যথেষ্ট অর্থ সঞ্চয় করিয়া থাকে। প্রত্যেক গয়ালীরই হাতী, পান্ধী, ঘোড়া আছে। গয়াতে এত গাড়ীঘোড়া দেখা যায় যে, কলিকাতার সহিত তুলনা করিলে গয়াই প্রধান হইবে। নগরবাসীদিগের সভ্যতার কিছুমাত্র উন্নতি নাই। এই নগরে কোন সভা কিংবা বিদ্যালয় দেখিতে পাওয়া যায় না। এখানে অপরকোন দেব-দেবীর মূৰ্ত্তি নিৰ্ম্মাণ করিয়া পূজা করা হয় না। লোকের মনে বিশ্বাস আছে, যে পূজা করিবে সে নিৰ্ব্বংশ হইবে। গয়া দুই ভাগে বিভক্ত-সেটি গয়া ও সাহেবগঞ্জ । সাহেবগল্পে সাহেবরাই বাস করেন। গয়াতে অনেক ইষ্টক নিৰ্ম্মিত অট্টালিকা আছে ; কিন্তু কোনটিরই শ্ৰছাদ নাই। বিষয়কৰ্ম্ম উপলক্ষে এখানে প্রায় পাঁচ হাজার বাঙ্গালী বাস করিয়া থাকেন। গয়াতে বৌদ্ধদিগের অনেক কীৰ্ত্তি আছে। উক্ত ধৰ্ম্মপ্রচারক শাক্যসিংহের প্রতিমূৰ্ত্তি একটি মন্দিরমধ্যে দেখিতে পাওয়া যায়। গয়ার পাথরবাটি ও তামাক বড় বিখ্যাত। একটি পাহাড়ে একটি গহবর আছে ; লোকে বলে-ভীমসেন হাটু গাড়িয়া বসিয়া পিণ্ড দিয়াছিলেন, সেই সময়ে তাহার বাম ইটু বসিয়া গিয়া ঐ গহ্বর হয়। আর একস্থানে প্রস্তরের উপর কতকগুলি গরুর পায়ের চিহ্ন আছে ; লোকে বলে—ব্রহ্মা এক সময়ে আসিয়া গয়ায় গোদান করেন, সেই সকল গরুর পদচিহ্ন। ইহার পর দেবগণ ট্রেণে উঠিলেন। ট্রেণ যথাসময়ে বাকীপুরে নামাইয়া দিল। ›ግ•