পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবগণের মর্ত্যে আগমন হাড়ি কলসী, কাহারও হাতে দড়ি, কাহারও হাতে পান কাহারও হাতে বা জলখাবারের ঠোঙ্গ—ষ্টেশন অভিমুখে আসিতেছেন। সকলে উপস্থিত হইয়া পূৰ্ব্বোক্ত সন্ত্রীক বাবুকে কহিল, “আপনার কি মুঙ্গেরে বাস করাই স্থির হইল ?” বাবু দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া কহিলেন “অগত্য ।” ইন্দ্র। কাশীবাবু, ঐ যে বাবুটি স্ত্রীপুত্র সঠিত ষ্টেশনে এলেন, উহাকে “মুঙ্গেরেই কি বাস করা স্থির হইল” এই কথা জিজ্ঞাসা করায় দুঃখ প্রকাশ করিলেন কেন ? - কাশী। হয়েছে কি জানেন, ঐ বাবুটি একজন গোড়া ব্রাহ্ম। যে স্ত্রীর হাত ধরিয়া আসিলেন, উহাকে উনি ব্রাহ্মমতে বিধবা-বিবাহ করেছেন । পুত্রটি স্ত্রীর সাবেক স্বামীর ঔরসজাত । এই দম্পতীযুগল জামালপুরে মুখে স্বচ্ছন্দে বাস করিতেছিলেন, হঠাৎ একটা ব্যাঘাত ঘটিল। ঐ পল্লীর যত স্ত্রীলোক ঐ স্ত্রীর কাছে প্রত্যহ দলে দলে আসিত। কেহ জিজ্ঞাসা করিত, “তোমার সাবেক স্বামী বেশি ভাল বাসিতেন, না বর্তমান স্বামী বেশি ভালবাসেন ?” তোমার কোন স্বামী দেখিতে সুন্দর ?” কেহ বলেন “তোমার ছেলে তো ওঁকে বাবা বলে ডাকে ? উনি একে স্নেহ মমতা করেন কেমন?” অপরা কহেন, “ওলো তুই থাম, সংবাবার আর কত স্নেহ হবে ? ভাল ব্রাহ্ম বোঁ, তুমি যে কয়েকদিন বিধবা ছিলে—মাছ খেতে পাওনি ? আহা! মাছ না হলে কি ভাত খাওয়া যায় ! বলি এখন কাটা চড়চড়ি বেশি করে খাচ্চো তো? একটু ভাই বেশি করে মাথায় সিদ্বর দিও। আশীৰ্ব্বাদ করি জন্মায়তি হও, আবার যেন তোমাকে ব্রাহ্মমতে তৃতীয় পক্ষে বিবাহ করতে না হয়।” কোন রমণী কহিলেন “বলি ব্রাহ্মবোঁ, তোমাদেরও কি বিয়ের সময়ে মন্ত্ৰ পড়িয়ে দান উৎসর্গ করে ? সত্যি করে বল না ভাই, কলা তলায় কজনে কজনে তোমাকে পিড়িতে বসিয়ে উচু করে ধরে বলেছিল—বর বড় না কনে বড় ?” কোন রমণী হয় তো জিজ্ঞাসা করিয়া বসিতেন "বলি ব্রাহ্মদিদি, তোমাদের কি বাসরঘর আছে ? চারি চোখে শুভদৃষ্টি করতে হয় তো ? সত্যি করে বল— তুমি ভাই ফুলশয্যার দিন কি কথা কয়েছিলে ? তোমার ছেলেটি কোথায় ছিল ?” আর এক রমণী হয় তো বলিয়া বসিলেন, “বলি, হাগা, ওগো ! তোমার কি ধুলোপায়ে লগ্ন হয়েছিল । জামাই বিয়ে করতে এসেই তো ছেলে কোলে করে আদর করেছিলেন?” এইরূপ প্রত্যহ বিরক্ত করায় ইহারা জামালপুর পরিত্যাগ १३ ●