দেবগণের মর্ত্যে আগমন যাইতেছিলেন । ব্রাহ্মণের কষ্ট দেখিয়া বৈদ্যনাথ অপর এক ব্রাহ্মণবেশে আসিয়া বলিলেন, “পিপাসায় প্রাণ যায়, ঐ জল আমাকেই দেও, পান করি।” বৃদ্ধ তদুত্তরে বলিলেন, “এ জল আমি বাবা বৈদ্যনাথের নাম করিয়া লইয়া, যাইতেছি, অতএব কি প্রকারে দিতে পারি ?" বৈদ্যনাথ বলিলেন, “পিপাসায় জল না দেওয়া মহাপাপ—তুমি বরং এ জল আমাকে পান করিতে দিয়া অপর জল গঙ্গা হইতে তুলিয়া লইয়া যাও।” তৎশ্রবণে ব্রাহ্মণ র্তাহাকে জল প্রদান করিলেন। তখন ব্রাহ্মণরূপী বৈদ্যনাথ সন্তুষ্ট হইয়া কহিলেন, “তুমি যাহাকে জল দিতে যাইতেছ, আমিই সেই বৈদ্যনাথ । তোমার ভক্তি ও কষ্ট দেখিয়া দয়া হওয়ায় এখানে আসিয়া দেখা দিলাম, আর তোমাকে বৈদ্যনাথে যাইতে হইবে না । অতঃপর আমি এই সুলতানগঞ্জের গৈরিকনাথ শিবের মধ্যে রহিলাম ! লোকে এখানে আমার মস্তকে জল প্রদান করিলে বৈদ্যনাথের জল প্রদান ফল প্রাপ্ত হইবে।” ব্ৰহ্মা ! অ, মরি মরি । ভক্তি শ্রদ্ধা না থাকিলে কি দেব দেবীর অনুগ্রহ হয় ? নারায়ণ ! দেখ ; আর তুমি কিনা “এ ক’রবো কেন ?” “ও করবে: কেন ?" 'এ ক’রে কি হয় ?” ব’লে আমার সঙ্গে বাকবিতগু কর । পুনরায় ট্রেন ছাড়িল এবং অনতিবিলম্বে ভাগলপুর ষ্টেশনে আসিয়া উপস্থিত হইল । দেবগণ দেখিলেন—অনেকগুলি লোক ব্যাগ হাতে ট্রেনে উঠিবার জন্ত দুটাছুটি করিতেছে। কোন বাবু যুবতী স্ত্রীর হাত ধরিয়া প্রত্যেক কামরার দ্বারের নিকট ছুটিয়া ছুটিয়া যাইতেছেন। স্ত্রীর সমস্ত অবয়ব একখানি মোটা বস্ত্রের দ্বারা আচ্ছাদন করা । স্বামী তাহার হাত ধরিয়ে যে দিকে টানিতেছেন, তিনি কলের পুত্তলিকার স্তায় সেই দিকে যাইতেছেন। বরুণ হাস্ত করিয়া কহিলেন, “আহা ! গৃহে ইহার শতমূখী হস্তে দিগম্বরী, এখন যেন চোরটা !" এই সময় “চাই পান’ ’চাই পান” “চাই জলখাবার’ চারিদিকে শৰ হইতে লাগিল এবং একজন ভাঙ্গা গলায় “ভাগলপুর" “ভাগলপুর" শবে চীৎকার করিয়া উঠিল । দেবগণ গাড়ী হইতে নামিয় গেটে টিকিট দিয়া বাহির হইলেন এবং একখানি গাড়ী ভাড়া করিয়া নগরাভিমুখে চলিলেন । ՀԳԵ
পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/২৩৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।