পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাগলপুর মুচি চুলি, কৃষ্ণনগর হইতে সংগড়া কুম্ভকার, কলিকাতা হইতে থিয়েটার যাত্র আনিবার খরচ সংগ্রহ করা হইয়া থাকে, অথচ বুড়ানাথের মন্দির মেরামতের পয়সা জুটে না ! নারা । এ তোমার অন্যায় কথা। যখন মুসলমান বাইওয়ালি স্বমধুর স্বরে গান ধরে এবং বেশ্বারা অঙ্গভঙ্গীর সহিত নৃত্য করিতে করিতে হাত নাড়ে, সেই আসনে বসিয়া পান চিবাইতে চিবাইতে তামাক টানার যে সুখ, তাহা শত শত বুড়ানাথের মন্দির প্রস্তুত করিয়া দিলেও হয় কি না সন্দেহ । বরুণ । দেখুন পিতামহ । বেলাও প্রায় অপরাহ এবং এই ভাগলপুরে বাসাও বড় দুষ্প্রাপ্য ; এই ভাঙ্গ মন্দিরে রাত কাটালে হয় না ? ব্ৰহ্মা ! চাবি কি ? দেবতার। সে রাত্রি বুড়ানাথের মন্দিরে কম্বল-শয্যায়, ব্যাগ-বালিশ মাথায় দিয়া রাত্রি কাটাইলেন এবং অতি প্রত্যুষে সকলে গাত্ৰোখান করিয়া গঙ্গাস্বানে চলিলেন । ঘাটে উপস্থিত হইয়া দেখেন—জলে যেন শত শত শতদল ফুটিয়া রহিয়াছে। মাড়োয়ারি স্ত্রীলোকের গঙ্গাজলে লজ্জা সত্বম বিসর্জন দিয়া নানারূপ অঙ্গভঙ্গীর সহিত জলক্রীড়া আরম্ভ করিয়াছে । বরুণ । এইটি ভাগলপুরের স্বানের ঘাট । মাড়োয়ারি স্ত্রীলোকের গাত্র ধৌত করিতেছে। ইহারা প্রত্যহ অতি প্রত্যুষে আসিয়া গাত্র ধৌত করিয়া থাকে ; মাসান্তে একটি করিয়া ডুব দেয় মাত্র । জলের ঘাটে আসিলে ইহাদের লজ্জা সরম থাকে না । স্থান করিয়া দেবতার বুড়ানাথের মন্দিরে প্রত্যাগমন করিলেন এবং শিবপূজা সমাপ্ত করিয়া প্রত্যেকে চাটি চাটি চাউল গালে দিয়া একটু জল খাইলেন । তৎপরে তাহারা যোগসর হইতে বাহির হইয়া পশ্চিম দিকে চলিলেন। কিছুদূর যাইয়া তাহারা দেখেন–রাস্তার উভয় পাশ্বের নর্দমায় কতকগুলি টুটি কাটা মুরগী পড়িয়া যন্ত্রণায় ছট্‌ফট্‌ করিতেছে । এই সময় একজন চাচা “বিশমোল্লা, শব্দ করিয়া একটি মুরগী জবাই করিয়া ছাড়িয়া দিল, মুরগীটি মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট, করিতে করিতে জঙ্গলের দিকে চলিল। তথাপি সে “বিশমোল্লা বিশমোল্লা” শব্দে চীৎকার করিতে ছাড়িল না । বোধ হয় তাহার চীৎকারে বিশমোল্লার পরিবর্তে এক বিয়াজিশমোল্লা ( শৃগাল ) সন্তুষ্ট হইয়া বন হইতে বাহির হইয়া মুরগীটিকে মুখে করিয়া দে দৌড় ! মুসলমানের লাঠি হন্তে লইয়া মুরগীর উদ্ধারে ছুটিল ; কিন্তু বিয়াল্লিশমোল্লা আর প্রত্যপণ করিল না। 会教>