পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/২৪৪

দেবগণের মর্ত্যে আগমন করাইয়া শমনভবনে প্রেরণ করিলেন । ইহার পর চাদ যখন তরী সাজাইয়া বাণিজ্যাৰ্থ বাহির হন, মনসা হকুমানের সাহায্যে কালিদহ নামক স্থানে তাহার তরী সমস্ত জলমগ্ন করেন । চাদকে এইরূপ ধারংবার কষ্ট দিয়াও মনসার আশা মিটিল না, তিনি চাদের কনিষ্ঠ পুত্র লখীন্দরের প্রাণ সংহার চেষ্টায় ফিরিতে লাগিলেন। গণকের চাদকে কহিলেন, “তোমার, পুত্রের বিবাহরাত্রে বাসরঘরে সর্পদংশনে প্রাণত্যাগ হইবে।” চাদ এই কথায় বাটির সন্নিকটস্থ সাতালি পর্বতের উপর এক লৌহের বাসরঘর প্রস্তুত করাইলেন এবং বেহুলা নামী এক সুন্দরীর সহিত পুত্রের বিবাহ দিয়া সেই রজনীতেই পুত্র ও পুত্রবধুসহ বাটিতে প্রত্যাগমন করিয়া তাহাদিগকে ঐ বাসরঘরে স্থাপন করিলেন । মনসার আদেশে ও ভয়ে কারিকরেরা ঐ লৌহনির্মিত বাসরঘরের এক স্থানে অতি সামান্তমাত্র ছিদ্র রাখিয়াছিল। মনসা ঐ সামান্ত ছিদ্র দিয়া প্রবেশ করিয়া লর্থীন্দরকে সংহার করিবার বাসনায় অতি সূক্ষ্ম সূত্রের আকার বিশিষ্ট সুদৰ্শন নামক এক জাতীয় সপকে প্রেরণ করেন । সপ অবলীলাক্রমে প্রবেশ করিয়া তাহাকে সংহার করে । প্রাতে বেহুলা সতী মৃত পতিকে ক্রোড়ে করিয়া কাদিতে লাগিলেন এবং শ্বশুরকে বলিয়া এক কদলী ভেলা প্রস্তুত করিয়া লইয়া তাহাতে পতিসহ আরোহণ করিয়া ভাগীরথীতে ভাসিতে ভাসিতে চলিলেন । তিনি এক স্থানে উপস্থিত হইয়া শুনিলেন, তথাকার কোন ধোপানী দেবতাদিগের কাপড় কাচিয়া থাকেন। অতএব ঐ ধোপানীর আশ্রয় লইলে উপকার হইবার সম্ভাবনায় পতিকে ভেলাসহ এক স্থানে বাধিয়া রাখিয়া ধোপানীর গৃহে যাইয়া আশ্রয় লইলেন, এবং তাহাকে মাসী সম্বোধনে ডাকিতে লাগিলেন । একদিন বেহুলা ধোপামালীকে অনেক অনুনয় বিনয়ে সম্মত করিয়া দেবতাদিগের বস্ত্রগুলি এমন পরিষ্কার করিয়া কাচিয়া দেন যে, দেবতারা সস্তুষ্ট হইয়া তাহাকে দেখিতে চাহেন এবং বর লইতে অনুরোধ করেন । এই সুযোগে সতী দেবতাদিগের নিকট হইতে বর লইয়া মৃত পতির প্রাণ দান করিয়াছিলেন। তভিয় তিনি আরো দুটি বর লুন, তন্মধ্যে একটিতে স্বামীর ছয় অগ্রজের জীবন দান ; অপরটিতে শ্বশুরের জলমগ্ন সপ্ততরীর পুনরুদ্ধার । চাঁদ সদাগর পুত্র পুত্রবধু সগুডিঙ্গ এবং অপর পুত্রগণকে ফিরিয়া পাইয়া মহাসন্তুষ্ট হইলেন, এবং তদবধি ভক্তির সহিত মনসার পূজা আরম্ভ করিলেন । অদ্যাপি এই চম্পাইনগরে বৎসর বৎসর শ্রাবণ সংক্রাস্তিতে এই উপলক্ষে একটি করিয়া বিখ্যাত মেলা হইয়া থাকে। 磁彙龜