পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্ৰহ্মলোক এই কথা শুনিয়া ব্ৰহ্মার মুখ মলিন হইয়া গেল। পূৰ্ব্ব পূৰ্ব্বকার দৈত্যদিগের উপগ্রবর্তাহার স্মরণ হওয়াতে থরথর করিয়া কঁাপিতে লাগিলেন এবং “চল দেখি— বেদে কি লেখা আছে” বলিয়া ইন্দ্র ও বরুণসহ ভবনাভিমুখে চলিলেন। তথায় উপস্থিত হইয়া চালের বাতা হইতে পুরাতন বস্ত্রে বাধা কতকগুলি বেদ বাহির করিয়া চশমা চক্ষে দিয়া দেখিতে দেখিতে কহিলেন, “ন, ইহাদের হইতে দেবগণের কোন ভয় নাই। এই ইংরাজ জাতির রাজ্যসময়ে মনসা, জগন্নাথ প্রভৃতি গ্রাম্য দেবগণ স্বর্গে চলিয়া আসিবেন।” বলিয়া হাস্ত করিলেন। ইন্দ্র । দাদা মহাশয় । আপনার তাতে এত সন্তোষ যে ? ব্ৰহ্মা। ভাই, এই রাজ্যসময়ে পতিতপাবনী দ্রবময়ী স্বরধুনীকে আমি পুনরায় কমণ্ডলুতে প্রাপ্ত হইব । আহা ! মাকে যখন ভগীরথ মর্ত্যে লইয়া যায়, বাছা কত কেঁদেছিলেন, “বাধা ! মনে রেখো, পত্র লিখিলে উত্তর দিও।” এইরূপ কত কথাই বলেছিলেন । এইবার এত দিনের পর মা আমার গৃহে আসিবেন—এত দিনের পর আমার সর্বদুখ দূর হইবে ; আর তিনি কয়েক বৎসরমাত্র নরলোকে আছেন । * বরুণ। মার দুঃখের পরিসীমা নাই। তাকে কলিকাতার মালবহনের কাজ করতে হচ্চে। পূৰ্ব্বে ঐরাবত যে প্রবাহ ধারণ করতে পারে নাই, সেই প্রবাহ ইংরাজের নিকট পরাস্ত হইয়াছে। ইংরাজেরা তাকে যথা ইচ্ছা খনন করিয়া লইয়া যাইতেছে । আবার হাবড়া ও হুগলীর নিকট বাধিয়াছে । ব্ৰহ্মা কঁদিয়া কহিলেন, “য়্যা, বেঁধেছে! তুমি নিকটে যাইলে কিছু বলেন ?” - বরুণ। কলকল শব্দে কঁাদিতে কাদিতে বলেন, “বরুণ! আমার বোধ হয় কপাল পুড়েছে—বাবা বুঝি বেঁচে নাই ; নচেৎ আমার এ দুঃখের দশা দেখে কখনই নিশ্চিন্ত থাকতেন না।” ইস্ত্র । আপনার একবার যাওয়া উচিত । ব্ৰহ্মা। কি করে ভাই যাই, জান তো আমার ঘুমেতেই মাথা খেয়েছে। * বরুণ। আপনি একদিন চলুন, নচেৎ লোকে ব্যঙ্গ করে প্রায়ই বলে থাকে —“বুড়ো, মেয়েটাকে জলে দিয়ে কেমন করে নিশ্চিন্ত আছে ?”

  • নুতন পঞ্জিকাতেও এইরূপ বলে বটে।

૨છે